বিশ্বজুড়ে

ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গ্রেপ্তার

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ধর্ষণের অভিযোগে বিজেপির নেতা এবং ভারতের সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্বামী চিন্ময়ানন্দকে (৭৩) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে তাঁরই পরিচালিত একটি কলেজের আইনের ছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। আজ শুক্রবার সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে চিন্ময়ানন্দকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এককালের দাপুটে এই বিজেপি মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দিনের পর দিন যৌন হেনস্তা, শ্লীলতাহানির অভিযোগ ছিল।

গতকাল চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারির দাবি জানাতেই স্বাস্থ্যের ‘অবনতি’ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। গত বুধবার ওই শিক্ষার্থী দ্রুত চিন্ময়ানন্দকে গ্রেপ্তার না করলে আত্মহত্যার হুমকি জানানোর পর পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে।

স্বামী চিন্ময়ানন্দ শক্তিশালী রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত। তিনি কয়েকটি আশ্রম ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন।

গত মাসের শেষ দিকে স্বামী চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ এনেছিলেন ২২ বছরের ওই আইন পড়ুয়া শিক্ষার্থী। তিনি অভিযোগ করেন, ‘পুলিশ ধর্ষণের অভিযোগ গ্রহণ করতে চায়নি।’

এ নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করা এক ভিডিওতে ওই অভিযোগে চিন্ময়ানন্দের নাম না করলেও তাঁর দাবি ছিল, ‘সমাজের এক প্রভাবশালী নেতা, যিনি অনেক মেয়ের জীবন নষ্ট করে দিয়েছেন, আমাকে খুনের হুমকি দিচ্ছেন।’

ওই ভিডিওতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে সাহায্যের অনুরোধও করেন তিনি।

শিক্ষার্থীর বাবাও উত্তর প্রদেশের পুলিশের কাছে তাঁর অভিযোগে এক প্রভাবশালী নেতার কথা বলেছিলেন। ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত হওয়ার পর তা নিয়ে আলোড়ন পড়ে যায়। এরপর সপ্তাহখানেক ওই তরুণীর কোনো খোঁজ মেলেনি। সে সময় বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে অপহরণ ও ভয় দেখানোর অভিযোগও দায়ের করা হয়।

গত সোমবার ৫০ জন পুলিশের পাহারায় আদালতে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দেন ওই শিক্ষার্থী। কলেজে ভর্তিতে সহযোগিতার দোহাই দিয়ে এক বছর ধরে তাঁর ওপর যৌন নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর গোসলের ভিডিও ধারণ করে তা নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করার অভিযোগও তুলেছেন। এ ছাড়া বন্দুকের ভয় দেখিয়ে চিন্ময়ানন্দকে জোর করে ম্যাসেজ করানোর অভিযোগও করেছেন তিনি। পরে তিনি চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যপ্রমাণ জোগাড় করতে চশমায় ক্যামেরা লাগিয়ে রাখেন।

চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। বিশেষ তদন্ত দল গত সপ্তাহে চিন্ময়ানন্দকে সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে। আজ শুক্রবার শাহজাহানপুর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে বিশেষ তদন্তকারী দল।

উল্লেখ্য, ভারতের বেশ কিছু কথিত বাবার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ নতুন নয়। ধর্ষণের দায়ে দণ্ডিত হয়ে গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে কারাবন্দী আছেন হরিয়ানার ‘কথিত সাধু’ ও ডেরা সাচা সৌদার প্রধান গুরুমিত রাম রহিম সিং ইনসান। এ ছাড়াও আশারাম বাপু, রাধে মা, সচ্চিদানন্দ গিরি, স্বামী ওম, নির্মল বাবা, ইচ্ছাধারী বাবা, স্বামী অসীমানন্দ, নারায়ণ সাঁই, রামপাল, আচার্য কুশমুনি, ব্রাহাস্পতি গিরি, ওম নম শিবায় বাবা ও মালখান সিংয়ের মতো বাবাদের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ পাওয়া যায়।

#এমএস

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close