আমদানি-রপ্তানীপ্রধান শিরোনামবিশ্বজুড়েশিল্প-বানিজ্য
চীন সম্ভবত আর বিশ্বের কারখানা থাকছে না- ফোর্বস
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ বিশ্বের কারখানা হিসেবে তিন দশক ধরে চীনের মাথায় যে মুকুট, সেটি সম্ভবত আর থাকছে না। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধের পর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ক্রেতা ও উৎপাদনকারীদের একাংশ ইতিমধ্যে চীন ছাড়ার সিদ্ধান্ত পাকা করেছে। অনেকে চীনের পাশাপাশি অন্য উৎস দেশ খুঁজছে।
‘আমি মনে করি, চীনকে উৎপাদনকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করার মডেলটি এ সপ্তাহেই মারা গেছে’, বলেছেন ভ্লাদিমির সিগনোরেল্লি, যিনি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ব্রিটন উডস রিসার্চের প্রধান। মন্তব্যটি ছাপা হয়েছে বিখ্যাত মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস–এর এক প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনটির শিরোনাম, বৈশ্বিক উৎপাদনকেন্দ্র হিসেবে চীনের সম্ভবত সমাপ্তি।
কেন এই সমাপ্তি, তার কয়েকটি কারণ তুলে ধরেছেন প্রতিবেদনটির লেখক কেনেথ রাপোজা। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন বাড়তি শুল্ক আরোপ শুরু করেন, তখন কিছু কোম্পানি অন্য দেশ থেকে পণ্য কেনা শুরু করে। তাদের চীনা অংশীদারেরা ভিয়েতনাম, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে যাওয়া শুরু করে। করোনার কারণে চীননির্ভরতা কমানোর চিন্তা আরও প্রকট হয়েছে।
ফোর্বস–এর প্রতিবেদনটি গত ১ মার্চ প্রকাশিত হয়। এতে চীনের পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়, যেখানে ব্যবসায়িক কার্যক্রম একরকম স্থবির। দেশটির গাড়ি প্রস্তুতকারক ও রাসায়নিক খাতের কারখানাগুলো অন্য খাতের তুলনায় বেশি বন্ধ হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কর্মীদের বেশির ভাগই কাজে ফিরে আসেননি। জাহাজ ও পরিবহনসেবা বিঘ্নিত। করোনার প্রভাবে আগামী কয়েক মাস ধরে বিশ্বব্যাপী অটোমোবাইল খাতের যন্ত্রাংশ, ইলেকট্রনিকস এবং ওষুধ সরবরাহ ব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটবে।
ফোর্বস–এর প্রতিবেদন বলছে, চীনের জন্য করোনাভাইরাস একটি ‘সোয়ান সং’। অভিধান ঘাঁটলে দেখবেন, সোয়ান সং মানে হলো, একজন শিল্পীর পেশাজীবনের শেষ পরিবেশনা। ফোর্বস–এর প্রতিবেদকের মতে, চীন আর সস্তা থাকছে না। সেখানে শ্রমিকের মজুরি বাড়ছে। পরিবেশদূষণের ক্ষেত্রেও চীন কঠোর। ট্রাম্প যদি দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হন, চীনের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য চুক্তির উদ্যোগ যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে কী হবে, সেটা ভাবতে বাধ্য হবে কোম্পানিগুলো।
মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন সম্ভবত আর বিশ্বের কারখানা থাকছে না। তাহলে এখন সুযোগ কার?
ফোর্বস–এর প্রতিবেদন বলছে, চীনের বাইরে নতুন কোনো দেশ বেছে নেওয়া সহজ নয়। কোনো দেশের চীনের মতো সরবরাহ ব্যবস্থা নেই। কিছু বড় আয়তনের দেশের চীনের মতো করকাঠামো আছে। যার তালিকায় অবশ্যই ব্রাজিল নেই। ভারত আছে। কিন্তু তাদের সরবরাহ ব্যবস্থা বা লজিস্টিকস সেবার অবস্থা ভয়াবহ। তারপর আসে মেক্সিকোর নাম, যারা যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় এক বাণিজ্য চুক্তি করেছে। ফোর্বস বলছে, ‘হ্যাঁ, সময় এখন মেক্সিকোর।’
/আরএম