দেশজুড়েপ্রধান শিরোনামস্বাস্থ্য

চীন ফেরত যাত্রীদের মধ্যে সার্সের লক্ষণ মেলেনি

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ চীন থেকে বাংলাদেশে সরাসরি যে ফ্লাইটগুলো এসেছে, সেসব ফ্লাইটের যাত্রীদের মধ্যে সিভিয়ার অ্যাকুইট রেসপিরেটরি সিনড্রোম (সার্স) ভাইরাসের লক্ষণ পাওয়া যায়নি। আজ মঙ্গলবার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে। চীনের এ ভাইরাস যাতে বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সে জন্য গতকাল সোমবার থেকে এই বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্ক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা থেকে চীনে প্রতিদিন ছয়টি ফ্লাইট যাওয়া-আসা করে। চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন, চায়না ইস্টার্ন ও ইউএস-বাংলা এসব সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করে। এসব ফ্লাইটে চীন থেকে আসা যাত্রীদের পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ উল আহসান বলেন, গতকাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৮০০ যাত্রী চীন থেকে সরাসরি এসেছেন। তাঁদের দুভাবে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। থার্মাল স্ক্যানার ও ইনফরমেশন কার্ডের মাধ্যমে এসব স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। সাধারণত কারও শরীরের তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট থাকলেও থার্মাল স্ক্যানার সংকেত দেয়। এ ছাড়া তথ্যভিত্তিক স্ক্রিনিংয়ে উড়োজাহাজের আরোহীদের কার্ড দিয়ে তথ্য নেওয়া হচ্ছে। চীন থেকে ফেরত বাংলাদেশি যাত্রীদের কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে চীনের কোন শহরে কত দিন ছিলেন। আর চীন থেকে আসা যাত্রীরা কোন শহর থেকে এসেছেন, তা জানতে চাওয়া হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে উড়োজাহাজের ভেতরে শুধু যাত্রীদের ও নামার পর কেবিন ক্রুসহ সব আরোহীদের আরেকটি কার্ড দেওয়া হচ্ছে। আর থার্মাল স্ক্যানারে কোনো যাত্রীর শরীরে জ্বরের উপসর্গ পাওয়া গেলে তাকে আরেকটি কার্ড দেওয়া হচ্ছে।

বিমানবন্দরের সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, বিমানবন্দরে তিনটি থার্মাল স্ক্যানার বসানো হয়েছে। একটি ভিআইপিদের বের হওয়ার পথে, আর দুটি সাধারণ যাত্রীদের জন্য উড়োজাহাজ থেকে ইমিগ্রেশনে যাওয়ার পথে। সাধারণত এই ভাইরাস প্রাণী থেকে প্রাণীর মধ্যে ছড়ায়। কিন্তু চীনা গণমাধ্যম ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে তাঁরা যে তথ্য পেয়েছেন, সেখানে দেখা গেছে, এখন মানুষ থেকে মানুষে এ ভাইরাস ছড়ায়। এ কারণে বিশেষ স্বাস্থ্য সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। অন্য সময় বিমানবন্দরে চারজন চিকিৎসক ও নয়জন নার্স শিফটে কাজ করেন। এখন আরও সাতজন চিকিৎসক ও পাঁচ-ছয়জন নার্স দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে।

বিবিসির খবরে বলা হয়, চীনজুড়ে ছড়িয়ে পড়া রহস্যজনক ভাইরাসে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। উহান শহরেই এবার প্রথম সার্স ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়। পরে বেইজিংসহ দেশটির বিভিন্ন এলাকায় এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে।

চীনা কর্তৃপক্ষ বলছে, বেইজিং, সাংহাইসহ দেশটির বিভিন্ন শহরে সার্স ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে গেছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই উহানের বাসিন্দা।

চীনের প্রতিবেশী দেশ দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, থাইল্যান্ডেও এই ভাইরাসের সংক্রমণে হয়েছে।

সার্স ভাইরাসের সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণার কথা বিবেচনা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এ বিষয়ে আগামীকাল বুধবার বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবে ডব্লিউএইচও।

ডব্লিউএইচও ইতিমধ্যে সার্স ভাইরাসের সংক্রমণজনিত রোগ নির্ণয়ের নির্দেশনা জারি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জ্বরের পাশাপাশি কাশি হচ্ছে। শুধু প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যেই নয়, মানুষ থেকে মানুষেও ছড়াচ্ছে ভাইরাসটি।

সার্স ভাইরাসে ২০০২ থেকে ২০০৩ সালে চীনের মূল ভূখণ্ডে ও হংকংয়ে প্রায় সাড়ে ৬০০ মানুষ মারা যায়।

#এমএস

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close