দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

চিকিৎসার নামে বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছে ক্যাসিনো সম্রাট

প্রভাবশালী নেতার বাসায় অবস্থান

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‌্যাব ও পুলিশ এখন পর্যন্ত ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে গ্রেফতার করতে পারেনি। তবে তাদের চেষ্টা অব্যাহত। এ অবস্থায় ‘ক্যাসিনো সম্রাট’ যাতে দেশ থেকে পালাতে না পারেন, সেজন্য তার দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

স্থগিত করা হয়েছে ব্যাংক হিসাব। তার বিরুদ্ধে দফায় দফায় দাফতরিক আদেশ হচ্ছে, কিন্তু তাকে কেউ গ্রেফতার বা আটক করতে পারছেন না। ধোঁয়াশা আছে তিনি দেশে না পালিয়ে গেছেন তা নিয়েও।

তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্রের দাবি, সম্রাট প্রভাবশালী এক নেতার বাসায় আত্মগোপন করেছেন। তাদের নজরদারির মধ্যেই আছেন তিনি। তার সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য পেলেই গ্রেফতার করা হবে।

সম্রাট এই বাসায় বসেই চিকিৎসার নামে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে তার সহযোগী প্রভাবশালী একাধিক নেতাও পলাতক।

এদের মধ্যে একজন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর একেএম মমিনুল হক সাঈদ সিঙ্গাপুর পালিয়ে গেছেন। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক মমিনুলের ব্যাংক হিসাবও স্থগিত করেছে।

র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার যুগান্তরকে বলেন, সম্রাটের অবস্থানের বিষয়ে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তাকে গ্রেফতারের ক্ষেত্রেও আমাদের কোনো বাধা নেই। তার বিষয়ে তথ্য পেলেই তাকে গ্রেফতার করা হবে।

ঢাকায় অবৈধ ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তি হচ্ছেন ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। সম্প্রতি পরিচালিত জুয়া-ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের শুরুতে সম্রাট আত্মবিশ্বাসী ছিলেন।

এ সময় বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হলেও তাকে কেউ স্পর্শ করবে না- এমন বিশ্বাস ছিল। উল্টো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে মনস্তাত্ত্বিকভাবে চাপে রাখতে অভিযানের শুরুর দিকে তিনি দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে কাকরাইলে মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের কার্যালয়ে অবস্থান নেন।

কিন্তু অভিযানের গতি ক্রমেই বাড়তে থাকায় তিনি ঘাবড়ে যান। দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা এবং ব্যাংক হিসাব জব্দ করার পর সম্রাট গ্রেফতার আতঙ্কে ভুগতে শুরু করেন।

এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী ও অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর মনোভাব অত্যন্ত কঠোর।

তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সরকারের কঠোর মনোভাবের কথা জানার পর দিশেহারা হয়ে পড়েন খোদ সম্রাট। কী করবেন ভেবে পান না।

অবস্থা বেগতিক দেখে তিনি আত্মগোপনে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। শুরুতেই ঘন ঘন অবস্থানও পরিবর্তন করেন। যুবলীগের কার্যালয় থেকে ‘ছদ্মবেশ’ নিয়ে বেরিয়ে আসেন।

এরপর দুটি ঠিকানা বদলের পর তিনি নির্ভরযোগ্য স্থানে (বর্তমান আস্তানা) চলে আসেন। বর্তমানে তিনি এখানেই পালিয়ে আছেন। কারও কারও মতে, সম্রাট কাকরাইলের অফিস থেকে বের হয়ে ঢাকার বাইরে চলে গেছেন।

সীমান্তবর্তী কোনো এক জেলা থেকে তিনি দেশ ছাড়বেন। তবে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রগুলোর দাবি, সম্রাট দেশেই আছেন। ঢাকায়ই অবস্থান করছেন। তাদের নজরদারিতেই আছেন তিনি।

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close