দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
‘চাকরি গেলে না খেয়ে মরতে হবে’, পাটুরিয়া ঘাটে শ্রমিকের আকুতি
নিজস্ব প্রতিবেদক, মানিকগঞ্জঃ প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২১ জেলার কর্মমুখী মানুষ রাজধানী ফিরছে।
শনিবার (০৪ এপ্রিল) সকাল থেকে হাজার হাজার মানুষের ঢল নেমেছে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে। ফেরিতে পদ্মা নদী পার হয়ে ঘাটে এসে গাড়ির জন্য অপেক্ষায় থাকে এসব লোকজন। গনপরিবহন বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে সবাই ট্রাকে রিকসা,ভ্যানে গাদাগাদি করে ফিরছে ঢাকার দিকে। আবার অনেকে পায়ে হেঁটে রওনা দিচ্ছে। এদের বেশি ভাগ লোক জন ঢাকাসহ আশে পাশে এলাকার পোশাক কারখানার শ্রমিক । এসময় নারী ও শিশুদের নিয়ে চরম দুর্ভোগে পরেছে এসব কর্মমুখী মানুষ।
জানাগেছে, আগামীকাল রোববার (০৫ এপ্রিল) থেকে রাজধানী ঢাকাসহ আশেপাশের এলাকাগুলোতে পোশাক কারখানা খুলবে। এ কারনে এ সকল পোশাক কারখানর শ্রমিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকার দিকে ফিরছে। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া এবং আরিচা –কাজীরহাট নৌ রুট দিয়ে পার হয়ে ওইসব অঞ্চলের মানুষ গুলো ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। এ দিকে মানিকগঞ্জ পুলিশ-প্রশাসন কঠোর ভাবে করোনা ভাইরাস প্রার্দুভাব রোধে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ অংশে গনপরিবহন বন্ধ রেখেছে। একারনে পণ্যবাহী ট্রাক,রিকসা,ভ্যানে করে ভেঙ্গে ভেঙ্গে কিছুর দুর গিয়ে থামছে আবার যাচ্ছে। এসময় ১০ কিলোমিটার পথ যাবার জন্য তাদেরকে জন প্রতি একশত টাকা দিতে হচ্ছে।
আব্দুল সালাম নামের একজন পোশাক শ্রমিক জানান, আগামী কাল থেকে গার্মেন্টস খোলা। এ কারনে করোনা ভাইরাসের সংক্রমের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছি। কিছু করার নেই চাকরি চলে গেলে পরিবারকে নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে, তাই যাচ্ছি ।
ফারুক নামের একজন জানান, আমরা কি মানুষ হলাম ভাই । এক দিকে গণপরিবহন করে রাখা হয়েছে,আবার আমাদের কারখানাও খোলার থাকবে। তাহলে আমরা কি ভাবে পৌঁছাবো। আমাদেও অফিসও বন্ধ রাখতে পারতো। তাহলে এ দুর্ভোগে পরতে হতোনা
বিআইডব্লউটিসির আরিচা কার্যলয়ের ভারপ্রাপ্ত ডিজিএম, মো.জিল্লুর রহমান জানান, গনপরিবহন চলাচল নিষেজ্ঞা থাকার কারনে এ নৌ-রুটে দিয়ে শুধু জরুরী কাঁচামালবাহী ট্রাক ও এম্বুলেন্স পারাপার করা হচ্ছে। ঘাট দিয়ে যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে জোর করে ফেরিতে উঠছে। শত শত যাত্রীদের আটকানো সম্ভব হচ্ছে না। এ রুটে ১৫টি ফেরি মধ্যে সীমিত আকারে চারটি ফেরি চলাচল করছে।
মানিকগঞ্জ পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মর্কতা জানান, করোন ভাইরাসের প্রার্দুভাব রোধে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করার লক্ষে মানিকগঞ্জের অংশের মহাসড়কে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে আগামী কাল থেকে পোশাক কারখানা খোলার কারনে দেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের কর্মমুখী লোকজন ফেরি পার হয়ে ঢাকার দিকে ফিরছে। এখন শতশত লোকজনদের ফিরানো সম্ভব হচ্ছে না। যে সব এলাকা থেকে এসব লোকজন আসছে সেখান থেকে থামাতে পারলে এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হত না।