দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
চলন্ত ট্রেনে কিশোরীকে ধর্ষণ চেষ্টা, অভিযুক্ত গ্রেফতার
পাবনা প্রতিবেদক: পাবনার ঈশ্বরদীতে আন্ত:নগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় আটক যুবককে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতারকৃত যুবক মমিনুল ইসলাম (২৬) এর বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরে। সে একজন নির্মাণ শ্রমিক।
ঈশ্বরদী জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার জানান, শ্লীলতাহানির শিকার ১৪ বছর বয়সী ওই কিশোরীর বাড়ি সিরাজগঞ্জে। সে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। রাজশাহীতে খালার বাসায় থেবে লেখাপড়া করে। নানি ও খালার সঙ্গে সে রাজশাহী যাচ্ছিল।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে সিরাজগঞ্জের মনসুর আলী স্টেশন থেকে তারা ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠেছিলেন। পথিমধ্যে রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনে ট্রেনটি থামার পর ওই কিশোরী ট্রেনের টয়লেটে ঢোকে। তখন টয়লেটের সামনেই দাঁড়িয়েছিলেন অভিযুক্ত যুবক।
ওই কিশোরী টয়লেট থেকে বের হওয়ার জন্য দরজা খুললেই তিনি ভেতরে ঢুকে পড়েন। এরপর রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী স্টেশন আসা পর্যন্ত প্রায় ৪০ মিনিট তিনি ওই কিশোরীকে টয়লেটে আটকে রেখে শ্লীলতাহানি করেন।
ওসি সুব্রত আরো জানান, ট্রেনের শব্দের কারণে ওই কিশোরীর চিৎকার শোনা যায়নি। তবে যাত্রীরা লক্ষ্য করেন অনেকক্ষণ ধরেই টয়লেটের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। তারা দরজায় ধাক্কা দিয়ে খুলতে বলেন। কিন্তু দরজা খোলা হচ্ছিল না। একপর্যায়ে তারা ওই কিশোরীর চিৎকার শুনতে পান। এরপরই দায়িত্বরত পুলিশকে ডাকা হয়।
পুলিশ গিয়ে টয়লেটের দরজা খুলতে বাধ্য করেন। এ সময় কাঁদতে কাঁদতে ওই কিশোরী বেরিয়ে আসে। তখন ট্রেনের যাত্রীরা মমিনুলকে মারধর শুরু করেন। এ সময় যাত্রীদের হাত থেকে উদ্ধার করে তারা মমিনুলকে নিজেদের হেফাজতে নেন পুলিশ।
রাত পৌনে ১১টার দিকে ট্রেনটি রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছে। এ সময় অভিযুক্ত যুবক, ওই কিশোরী এবং তার খালা ও নানিকে রাজশাহী রেলওয়ে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
রাজশাহী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাঈদ ইকবাল জানান, নির্মাণ শ্রমিক মমিনুল ঢাকা থেকে বাড়ি আসছিলেন। ওই কিশোরীর ভাষ্য অনুযায়ী, ট্রেনের টয়লেটের ভেতর মমিনুল দীর্ঘ সময় ধরে ওই কিশোরীর মুখ চেপে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা চালান। তবে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু শ্লীলতাহানি ঘটেছে।
ওসি সাইদ ইকবাল বলেন, ঘটনাস্থল রেলওয়ের ঈশ্বরদী জিআরপি থানার অধীনে হওয়ায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার ঢাকাগামী ‘ধূমকেতু এক্সপ্রেস’ ট্রেনে কিশোরীকে তার স্বজনসহ এবং অভিযুক্ত যুবককে ঈশ্বরদী জিআরপি থানায় পাঠানো হয়।
ঈশ্বরদী জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুব্রত কুমার জানান, সিল্কসিটি ট্রেনে কিশোরী ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে কিশোরীর খালা বাদী হয়ে মমিনুলকে আসামী করে শুক্রবার ভোরে মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্তকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।