বিনোদন
গান গেয়ে গৃহিণী জিতলেন ২০ লাখ টাকা
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ গানের প্রতি ছিল প্রবল ভালোবাসা। কিন্তু বিয়ের পর অন্য ৮-১০ জন নারীর মতো খুলনার গৃহিণী দীপ্তি সরকার এ ভালোবাসাকে বেঁধে ফেলেন সংসারের আঁচলে। তবে থেমে যাননি। সুরেলা কণ্ঠ ছিল তাঁর। উৎসাহ আর সমর্থন পেয়ে তিনি হয়ে উঠলেন সুরের পাখি। তাঁকে সেই মঞ্চটা তৈরি করে দিল ‘সিলন সুপার সিঙ্গার’। গৃহিণী থেকে তিনি এখন গানের তারকা। গৃহিণীদের নিয়ে সংগীত প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান “সিলন সুপার সিঙ্গার”এ বিজয়ী হলেন তিনি। জিতলেন ২০ লাখ টাকার পুরস্কার।
বাংলাদেশের আনাচকানাচে ছড়িয়ে থাকা প্রতিভাময়ী গৃহিণী সংগীতশিল্পী খুঁজে বের করার প্রয়াসে আয়োজন করা হয় ‘সিলন সুপার সিঙ্গার’। সারা দেশ থেকে ১৫ হাজারের বেশি প্রতিযোগীর অংশগ্রহণে সাত মাস আগে যাত্রাটা শুরু হয়েছিল। গতকাল শুক্রবার ১৮ অক্টোবর এনটিভিতে প্রচারিত হয়েছে এর জমকালো গ্র্যান্ড ফিনালে।
প্রথম রানারআপ সুমনা রহমানের হাতে এসেছে ১০ লাখ টাকা। যৌথভাবে দ্বিতীয় রানারআপ ফাহমিদা নাসরিন প্রীতি ও শায়নি শিঞ্জন পেয়েছেন ৬ লাখ টাকা। প্রিয়াঙ্কা দাশসহ সেরা ১১তে জায়গা করে নেওয়া বাকি সাতজনকে ১ লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
সব ছাপিয়ে আগ্রহের কেন্দ্রে ছিলেন দীপ্তি সরকার। দীর্ঘ প্রতিযোগিতা শেষে সর্বশেষ সেরা পাঁচ প্রতিযোগী গৃহিণীদের নিয়ে আয়োজিত এই রিয়েলিটি শোর গ্র্যান্ড ফিনালেতে বিজয়ীর নাম ঘোষণার পর থেকে যেন ভাষা হারিয়ে ফেললেন দীপ্তি। তাঁর চোখে আনন্দের অশ্রু ঝরছিল। আপ্লুত হয়ে বললেন ‘নিজেকে যেন নতুনভাবে আবিষ্কার করেছি এই আয়োজনে। আমার সাধারণ গৃহিণীর পরিচয়টা বদলে দিল সিলন সুপার সিঙ্গার। আর কখনো গান ছাড়ব না। গান নিয়েই এগিয়ে যাব।’
চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় পাঁচ প্রতিযোগীই গেয়েছেন। এদিন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কিংবদন্তি রুনা লায়লা। তিনি দুটি গান পরিবেশনের পাশাপাশি সেরা পাঁচের গান শোনার পর নিজের মুগ্ধতার কথা বলেন।
ছিল অভিনেত্রী পূর্ণিমার নাচ এবং প্রতিযোগিতার তিন মূল বিচারক ফাহমিদা নবী, পার্থ বড়ুয়া ও তারিনের পরিবেশনা। ‘সিলন সুপার সিঙ্গার’-এ অংশ নেওয়া সফল কর্মজীবী নারীদের মধ্যে চারজন গৃহিণীর গানও ছিল। তাঁরা হলেন পুলিশ কর্মকর্তা ইথি, চিকিৎসক দৃষ্টি, শিক্ষক শিলা ও সমাজকল্যাণ কর্মী মিতু। দাম্পত্য জীবনের নানান মজার দিক নিয়ে তিনটি নাটিকা দেখানো হয় অনুষ্ঠানে।
আবুল খায়ের গ্রুপের ব্র্যান্ড ও মার্কেটিং পরিচালক নওশাদ করিম চৌধুরী বলেন, ‘এই শিল্পীরা প্রমাণ করেছেন, একটু উৎসাহ পেলে নিজের হারিয়ে ফেলা শিল্পীসত্তাকে কী দারুণভাবেই না পুনরাবিষ্কার করতে জানেন। আমাদের গৃহিণীদের কত বাধা পেরোতে হয় প্রতিটি মুহূর্তে, তা-ও আমরা নতুন করে জেনেছি।’
নওশাদ করিম বলেন, সারা দেশ ঘুরে বিচারকেরা মোট ৮১ জন গৃহিণীকে ইয়েস কার্ড দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন শাশুড়ির আপত্তির কারণে শেষ পর্যন্ত মূল পর্বে অংশ নিতে পারেননি। এটা যেমন সত্যি, আবার এমনও দেখেছি, আট মাসের সন্তানসম্ভবা প্রীতি পরিবারের সমর্থন নিয়ে কীভাবে এগিয়ে এসেছেন। তিনি সেরা পাঁচেও চলে আসতে পেরেছেন।
এনটিভির অনুষ্ঠান প্রধান মোস্তফা কামাল সৈয়দ বলেন, ‘এই আয়োজন থেকে হারিয়ে যেতে বসা এই গানের পাখিরা সংগীতচর্চা ধরে রাখার উৎসাহ ফিরে পেয়েছেন, এটাই এই আয়োজনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। আশা করি, আবুল খায়ের গ্রুপ ভবিষ্যতেও এমন আয়োজন অব্যাহত রাখবে।’
#এমএস