দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

গাজীপুরে ডিবি পুলিশের হেফাজতে নারীর মৃত্যু

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে ধরে নেওয়ার তিন ঘণ্টার মধ্যে মারা যান তিনি। তবে স্বজনদের দাবি তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। নিহত ইয়াসমিন বেগম (৪০) মহানগরের ভাওয়াল গাজীপুর এলাকার আব্দুল হাইয়ের স্ত্রী। গতকাল বুধবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

নিহত ইয়াসমিনের ছেলে ইয়াসির আরাফাত জিসান বলেন, তাদের একটি পোলট্রি খামার আছে। সেখানে কাজ শেষে ক্লান্ত মা রাত ৮টার দিকে শুয়ে পড়েন। এ সময় গাজীপুর মহানগর ডিবি পুলিশের একদল সদস্য বাড়িতে এসে বাবাকে খুঁজতে থাকেন। বাবাকে না পেয়ে ছোট বোনের সামনেই মাকে মারধর করে তুলে নিয়ে যায় ডিবি সদস্যরা। রাত ১০টার দিকে ফোন দিয়ে তাকে জানানো হয় দ্রুত হাসপাতালে যেতে। তার মা খুব অসুস্থ। রাত ১১টার পর তিনি গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখেন মায়ের নিথর দেহ পড়ে আছে।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম জানান, রাত ১০টার দিকে নূরে আলম নামে পুলিশের এক সদস্য ইয়াসমিনকে হাসাপালে ভর্তি করেন। এ সময় ইয়াসমিন শ্বাসকষ্ট ও বুকের ব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন। পরীক্ষা করে দেখা যায় তিনি হার্ট অ্যাটাক করেছেন। রাত ১১টা ২০ মিনিটে তিনি মারা যান। তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না বলে জানান চিকিৎসক।

গাজীপুর মহানগর ডিবির উপ-পুলিশ কমিশনার মনজুর রহমান জানান, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই ওই বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। ইয়াসমিনের কাছ থেকে একশ’ পিস ইয়াবা উদ্ধারের পর তাকে আটক করা হয়। ইয়াসমিন ও তার স্বামী আবদুল হাই দু’জনই মাদক ব্যবসায়ী। তাদের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা রয়েছে। তিনি বলেন, আটকের পর ইয়াসমিন অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

ইয়াসমিনের স্বামী আবদুল হাই বলেন, ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে তিনি একটি মাদক মামলার আসামি হয়েছেন। ওই মামলায় প্রায় তিন মাস কারাবাসের পর দু’মাস আগে জামিনে বের হন তিনি।

নিহতের ছেলে জিসানের অভিযোগ, তার বাবা মাদকসেবী হলেও বিক্রেতা নন। তাদের পরিবারের কারও বিরুদ্ধে কোনো মাদক মামলা নেই। মাকে ধরে নিয়ে নির্যাতনের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।

গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার আনোয়ার হোসেন বলেন, এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আজাদ মিয়াকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী চার কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close