প্রধান শিরোনামস্বাস্থ্য
গণস্বাস্থ্যের বেতন কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, সংবাদের প্রতিবাদ ও বক্তব্য
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কর্মীদের বেতন কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিয়েছে সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি গত ২৪ অক্টোবর, ২০১৯ ইং তারিখে ঢাকা অর্থনীতি ডট কম-এ প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে প্রতিবাদলিপি পাঠিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. মনজুর কাদির আহমেদের স্বাক্ষরকৃত একটি প্রতিবাদলিপিতে উল্লেখ্য করা হয়, “গত ২৪শে অক্টোবর প্রকাশিত সংবাদটি বস্তুনিষ্ট হয়নি বরং বিভ্রান্তিকর এবং ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে বিধায় আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ছবি প্রতিযোগিতার নামে কোনো চিকিৎসক/কর্মীর বেতন কর্তন করা হয়নি এবং কাটার কোন সুযোগ নেই। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রাতিষ্ঠানিক কিছু আদর্শ আছে যা অন্য প্রতিষ্ঠানের সাথে নাও মিলতে পারে। এর মধ্যে সর্বস্তরে বাংলা ভাষা ও তারিখের ব্যবহার, প্রতিদিন সকালে সকল কর্মী মিলে এক ঘন্টার কৃষিকাজ, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাতের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন, কর্মীদের মানসিক বিকাশে বছরে একবার বাৎসরিক আয়ের সামান্য অংশ দিয়ে গণস্বাস্থ্য ও গণপ্রকাশনী কর্তৃক প্রকাশিত বই ও পত্রিকা ক্রয় অন্যতম। সংগত কারনে বিভিন্ন বিভাগের পরিচালকবৃন্দ কর্মীদের বই কেনার ব্যাপারে জানান। তখন অনেক কর্মীই নগদ টাকায় বই না কিনে বইয়ের মূল্য বেতন থেকে কর্তন করে তাদের বই দিতে বলেন।
ডা. মনজুর কাদির আহমেদ আরো উল্লেখ্য করেন, “পরবর্তীতে কর্মীদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে বেতন কর্তনের বিষয়টি প্রত্যাহার করা হয় এবং বলা হয় যে, যার যার বই সে নিজেই কিনবে”
প্রতিবেদকের মন্তব্যঃ উপযুক্ত তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের পর গত ২৪ অক্টোবর, ২০১৯ ইং তারিখে সংবাদটি প্রকাশ করা হয়। প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, ‘বই ক্রয় কোন ইন্টার্ণ চিকিৎসক বা ট্রেইনি চিকিৎসকদের জন্য প্রযোজ্য নয়। যারা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মী তাদের জন্য প্রযোজ্য।’ উল্লেখ্য যে, প্রকাশিত সংবাদে ‘ইন্টার্ণ চিকিৎসক বা ট্রেইনি চিকিৎসক’ আলাদা ভাবে উল্লেখিত ছিলো না। বরং ‘গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেল কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের’ বেতন কর্তনের কথা বলা হয়েছে।
এছাড়া ভুক্তভোগী কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এখানে প্রতিবেদকের কোন মনগড়া তথ্য উপস্থাপিত করা হয়নি।
প্রতিবাদলিপিতে গণস্বাস্থ্য মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কর্তব্যরত বিভিন্ন বিভাগের মেডিকেল অফিসার, লেকচারার, রেজিস্ট্রার, সহকারী/সহযোগী অধ্যাপক/অধ্যাপকগণ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নিয়োগপ্রাপ্ত নন এবং তাঁরা বেতন কর্তনের পূর্ব সিদ্ধান্তের আওতাভুক্ত ছিলেন না, এমন কোন তথ্য উপস্থাপন করা হয়নি।
প্রতিবাদলিপিতে কর্মীরা নগদ অর্থের পরিবর্তে বেতন থেকে বইয়ের মূল্য কর্তন করে তাদের বই দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু উক্ত বইয়ের কোনো তালিকা অথবা উক্ত বই সমূহে ছবি প্রতিযোগিতার কোন বই অন্তর্ভুক্ত নয়, এমন কোন বক্তব্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে পাওয়া যায়নি।
যেখানে বছরে একবার বাৎসরিক আয়ের কিছু অংশ দিয়ে বই ও পত্রিকা ক্রয় করার নিয়ম রাখা হয়েছে, সেখানে বাংলা ক্যালেন্ডারের আশ্বিন-কার্তিক মাসে কোন বাৎসরিক আয়ের অধীন উক্ত বই ক্রয়ের প্রস্তাবনা করা হয়েছিল, সেই বিষয়ে বক্তব্য প্রতিবাদলিপিতে অনুপস্থিত। এবং বেতন কর্তনের সিদ্ধান্তটি যদি নিয়মমাফিক সিদ্ধান্ত বা প্রক্রিয়া হয়ে থাকে, তাহলে কেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র তাদের উক্ত সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে, প্রতিবাদলিপিতে তারও কোন ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।
মুক্তিযোদ্ধের ইতিহাসের সাথে ওতপ্রোতভাবে মিশে থাকা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মতো একটি প্রতিষ্ঠান দেশের প্রতিটি মানুষের মনেই একটি সম্মানের জায়গা দখল করে আছে। বেতন কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রতিবেদক আশা প্রকাশ করছে,গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র তাঁদের মানবসেবার কাজের প্রসারের পাশাপাশি নিজ কর্মীদের সম্মান ও সুযোগ সুবিধার বিষয়ে আরো যত্নবান হবেন।