দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
গণধর্ষণের লজ্জা সইতে না পেরে আত্মহত্যা, প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন সিলেটের বিশ্বনাথের তরুনী পপি বেগম (১৯)। দলবদ্ধ ধর্ষণের অপমান ভুলতে পপি বেগম ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। দাফনের দুই দিন পর পপির ব্যবহৃত একটি ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে সুইসাইড নোট পাওয়া যায়। আর সেই নোট থেকেই এই তথ্য মিলেছে। এর আগে গত ১০ অক্টোবর বিকেলে নিজের বসত ঘর থেকে পপির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
পপি উপজেলার অলংকারী ইউনিয়নের লালটেক গ্রামের শুকুর আলীর মেয়ে। এ ঘটনায় গত সোমবার রাতে পপির বাবা শুকুর আলী বাদী হয়ে চার জনের নাম উল্লেখ করে বিশ্বনাথ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন, সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা উপজেলার চেরাগী গ্রামের আজিজুর রহমানের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩৫), একই গ্রামের মৃত আবদুল মন্নানের ছেলে ফয়জুল ইসলাম (৩৬) আবদুল মনাফের ছেলে বারিক মিয়া (৩৭) ও মৃত মতছির আলীর ছেলে জাহেদ মিয়া (২২)।
বৃহস্পতিবার রাতে ওই মামলার প্রধান আসামি জাহাঙ্গীর আলমকে সিলেটের ওসমানীনগর এলাকা থেকে সিলেট র্যাব-৯ গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে বিশ্বনাথ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে ওই মামলার অপর আসামি ফয়জুল ইসলাম ও জাহেদ মিয়াকে র্যাব ও পুলিশ গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) রমা প্রসাদ বলেন, গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামিকে র্যাব-৯ গ্রেপ্তার করে থানায় হস্তান্তর করেছে। গ্রেপ্তারকৃত ওই আসামিকে আজ শুক্রবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়। কিন্তু আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। ওই মামলার বাকি এক আসামিকে গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বিশ্বনাথের লালটেক গ্রামের শুকুর আলীর মেয়ে পপি বেগম গত ৯ অক্টোবর দিবাগত রাতে তার বোনের বাড়ি দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তেতলী চেরাগী গ্রামে গণধর্ষণের শিকার হন। পরদিন সকালে বোনের বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে ফিরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। তাকে দাফনের দু’দিন পর তারই ব্যবহৃত ভ্যানেটি ব্যাগে নিজ হাতে লেখা একটি চিরকুট (সুইসাইড নোট) পায় পরিবারের সদস্যরা। ওই চিরকুটে পপি উল্লেখ করেন বুধবার (৯ অক্টোবর) দিবাগত রাতে বাইরে যান। তখন বারিক ও জাহেদ তার (পপির) মুখ চেপে জোর করে বাড়ির পাশের জঙ্গলে নিয়ে যায়। তখন বারিক-জাহেদ ও তাদের সহযোগীরা মারধর করে পপিকে পাশবিক নির্যাতন করে। নির্যাতনের পর পপিকে বোনের বাড়িতে (যে জায়গা থেকে উঠিয়ে নেওয়া হয়, সেই স্থান) ফেলে রেখে যায় জাহাঙ্গীর। আর গণধর্ষণের লজ্জা সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেন পপি।
/আরএম