দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

গণধর্ষণের পর ৮ বছরের শিশুকে শ্বাসরোধে হত্যা

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ চার জন মিলে ধর্ষণের পর আট বছরের শিশু এমরান হোসেনকে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এরপর লাশটি মাছের ঝুড়িতে লুকিয়ে রেখে আসামিরা পালিয়ে যায়। এমরান হত্যা মামলায় গ্রেফতার হওয়া ওয়াসিম আকরামের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) আলমগীর হোসেন। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) এসপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এমরান হোসেন

এমরান হত্যার আট দিনের মাথায় পুলিশ ‘ক্লুলেস’ এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করলো। গত ২৫ আগস্ট রাতে ছয়ানী বাজারে পরিত্যক্ত টিনের দোকান ঘরের ভেতর পরিত্যক্ত মাছের ঝুড়ি থেকে এমরানের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, বেগমগঞ্জের ছয়ানী ইউপির শরীফপুর গ্রামের সামছুল হকের ছেলে এমরান গত ২২ আগস্ট দুপুর থেকে নিখোঁজ ছিল। সে ছয়ানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে পড়তো। ২৩ আগস্ট তার বাবা বেগমগঞ্জ থানায় একটি জিডি করেন। জিডির ভিত্তিতে পুলিশ অনুসন্ধান চালিয়ে ২৫ আগস্ট রাতে ছয়ানী বাজারের শহীদের পরিত্যক্ত একচালা টিনের দোকান ঘরের ভেতরে একটি প্লাস্টিকের মাছের ঝুড়ির মধ্য থেকে গলায় রশি প্যাঁচানো অবস্থায় একটি শিশুর লাশ উদ্ধার করে। মুখমণ্ডল বিকৃত হওয়ায় প্রথমে লাশের পরিচয় শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। অনেক চেষ্টার পর শিশুটির প্যান্টের স্টিকার দেখে পরিচয় শনাক্ত করা হয়। এরপর ২৬ আগস্ট এমরানের বাবার জিডি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয় এবং তদন্ত ভার দেওয়া হয় বেগমগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নূরে আলমের ওপর।

সংবাদ সম্মেলনে এসপি বলেন, ক্লুলেস এ হত্যাকাণ্ডটির তদন্তে নেমে কিছু তথ্য পাওয়া যায়। যার সূত্র ধরে মামলার অন্যতম আসামি ওয়াসিম আকরামকে ১ সেপ্টেম্বর ছয়ানী বাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার বাড়ি ছয়ানীর বড় মেহেদীপুরে। ওয়াসিমকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে এমরান হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শোয়েব উদ্দিন খানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

ওয়াসিম জানায়, ২২ আগস্ট রাত ৮টার দিকে সে-সহ চার জন এমরানকে শহীদের টিনের ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে শিশুটির মুখ দিয়ে ফেনা বের হলে তার গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে মৃতদেহটি প্লাস্টিকের মাছের ঝুড়িতে ভরে সেখানে লুকিয়ে রেখে তারা চলে আসে।

মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।

পরিবারের পক্ষ থেকে এমরানের মামা মিজানুর রহমান বলেন, ‘দ্রুততম সময়ের মধ্যে মামলার রহস্য উদঘাটন হওয়ায় নোয়াখালী জেলার এসপি, বেগমগঞ্জ থানার ওসি ও তদন্তকারী কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আশা করি, আদালতে মামলাটির দ্রুত নিষ্পত্তির পর আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা কার্যকর হওয়ার মাধ্যমে আমাদের পরিবারকে প্রাপ্য ন্যায়বিচার দেওয়া হবে।’

#এমএস

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close