আমদানি-রপ্তানীপ্রধান শিরোনাম
খাতুনগঞ্জে লিটারে ৩৫ টাকা কমল ভোজ্যতেলের দাম
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং রেট কমার পাশাপাশি দেশের বাজারে ক্রেতা সংকটে অবশেষে ভোজ্য তেলের দামে বড় ধরনের ধস নেমেছে।
এক মাসের ব্যবধানে প্রতি মণ সয়াবিনে ৭০০ এবং পাম অয়েলে ১ হাজার ৫০০ টাকা কমেছে। পাইকারি পর্যায়েও লিটারে অন্তত ৩৫ টাকা কমেছে।
এদিকে আদা, রসুন ও পেঁয়াজের দাম কমলেও নানা অজুহাতে আবারও অস্থির হতে শুরু করেছে ডাল ও চিনির বাজার।
করোনার কারণে উৎপাদনকারী দেশগুলোতে শ্রমিক সংকটের মুখে আন্তর্জাতিকভাবে গত দু’বছরের বেশি সময় ধরে ভোজ্যতেলের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। তার সঙ্গে চলতি বছরের শুরুতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ভোজ্যতেলের বাজার আরও বেশি ঊর্ধ্বমুখী করে তোলে। তবে নানা জটিলতায় আশঙ্কাজনকহারে ক্রেতা কমে যাওয়ায় বুকিং রেটও পড়ে যাচ্ছে।
এক মাসের মধ্যে প্রতি মেট্রিক টন সয়াবিনে সাড়ে ৫০০ এবং পাম অয়েলে সাড়ে ৭০০ মার্কিন ডলার কমে গেছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং রেট (মার্কিন ডলার)
তেলের ধরন (প্রতি মেট্রিক টন) সয়াবিন পামওয়েল
বর্তমান দর ১৪,৫০ ১,০৫০
গত মাসের দর ২,০০০ ১,৮০০
দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম (টাকা)
তেলের ধরন (প্রতি মণ) সয়াবিন পামওয়েল সুপার সয়াবিন
বর্তমান দর ৬,৬০০ ৫,০০০ ৬,০০০
গত মাসের দর ৭,৩০০ ৬,৫০০ ৭,০০০
মসলার দর (প্রতি কেজি)
মসলার ধরন পেঁয়াজ রসুন আদা
বর্তমান দর ৩০ টাকা ৮০ টাকা ৫০ টাকা
গত সপ্তাহের দর ৪৫ টাকা ৮৫ টাকা ৬০ টাকা
ডালের দর (প্রতি কেজি)
ডালের ধরন মসুর মুগ ছোলা
বর্তমান দর ৯৩ টাকা ৯১ টাকা ৫৮ টাকা
গত সপ্তাহের দর ৮০ টাকা ৭৯ টাকা ৫৪ টাকা
চিনির বাজার (প্রতি মণ)
বর্তমান দর ২ হাজার ৭৮০ টাকা
গত সপ্তাহের দর ২ হাজার ৭৬০ টাকা
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ মেসার্স আর এন এন্টারপ্রাইজের মালিক আলমগীর পারভেজ বলেন, এটা আন্তর্জাতিক বাজারে যেভাবে বাড়ছে তার চেয়ে দ্বিগুণ গতিতে কমে গেছে।
আন্তর্জাতিক বাজারের মতো দেশের বাজারেও কমেছে সব ধরনের ভোজ্যতেলের দাম। গত এক মাসে ভোজ্যতেলের দামের ক্ষেত্রে প্রতি কেজিতে কমেছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা।
খাতুনগঞ্জ মেসার্স আব্বাস সওদাগরের ম্যানেজার জাফর আহমেদ বলেন, ৪০ টাকা করে দাম কমে গেছে প্রতি কেজিতে। বুকিং রেট কম হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে দাম ছেড়ে বিক্রি করা হচ্ছে।
অবাধে ভারতীয় পণ্য আসতে থাকায় এক সপ্তাহের মধ্যে আদা, রসুন ও পেঁয়াজের দাম কমেছে।
খাতুনগঞ্জ মেসার্স অছি উদ্দিন সওদাগরের মালিক রুহুল আমিন রিগ্যান বলেন, ঈদের আগে চাহিদা ছিল প্রচুর। সেজন্য দামটা একটু বেশি ছিল। ঈদের পরে চাহিদা কমার কারণে দামটা কমে গেছে।
এদিকে ডলারের তুলনায় টাকার মান কিছুটা কমে যাওয়ায় ডাল আমদানিতে প্রভাব পড়ছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। তাই সব ধরনের ডালের দামে প্রতি কেজিতে এক থেকে দু’টাকা বেড়েছে।
খাতুনগঞ্জ মেসার্স তৈয়বিয়া বাণিজ্যালয়ের মালিক সোলায়মান বাদশা বলেন, ডলারের দাম বেশি হবার কারণে নতুনভাবে এলসি হচ্ছে না। আর যেগুলো আসছে ওগুলোর পেমেন্ট আমাদের বেশি দামে দিতে হবে।
বেশ কিছুদিন ধরে বাংলাদেশে চিনি রফতানি বন্ধ রেখেছে ভারত। এ সুযোগে বাড়ানো হচ্ছে চিনির দাম।
খাতুনগঞ্জ মেসার্স আর এম এন্টারপ্রাইজের মালিক মাহমুদুল হক লিটন বলেন, শুল্কহার নিয়ে বাজারে যে অস্থিরতা, তা ইতোমধ্যে কমে গেছে। এখন বাজার অনেকটাই স্থিতিশীল।
ব্যাপক চাহিদার কারণে অধিকাংশ ভোগ্য পণ্যই বাংলাদেশে আমদানি করতে হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের পাশাপাশি স্থলবন্দরগুলো দিয়ে এসব পণ্য আমদানি হয়।