প্রধান শিরোনামব্যাংক-বীমাশিল্প-বানিজ্য
ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের প্যাকেজ থেকে ঋণ বিতরণে প্রতিষ্ঠানও অনাগ্রহী
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ মহামারি করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাতের উদ্যোক্তাদের টিকিয়ে রাখতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ২০ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজের বিশেষ ঋণ সুবিধার ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু নানা অজুহাতে ব্যাংকগুলোর মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের প্যাকেজ থেকে ঋণ বিতরণে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। ৩৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ২০টি প্রতিষ্ঠানের ঋণ বিতরণের কথা রয়েছে। কিন্তু গত পাঁচ মাসে ঋণ বিতরণ করেছে মাত্র পাঁচটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান।
সিএমএসএমই খাতের ঋণ বিতরণ বাড়াতে বৃহস্পকিবার আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে বৈঠক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, ২০ হাজার কোটি টাকার তহবিলের মধ্যে ২০টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ৫৮৪ কোটি টাকা বিতরণের জন্য লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এপ্রিলের এই প্যাকেজ গঠনের পর ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করেছে মাত্র পাঁচটি প্রতিষ্ঠান। এগুলো হচ্ছে- বিডি ফাইন্যান্স, আইডিএলসি, আইপিডিসি, সিভিসি ফাইন্যান্স ও ইউনাইটেড ফাইন্যান্স। তারা বিতরণ করেছে ৮৯ কোটি টাকা। এরমধ্যে আইডিএলসি ৬৫ কোটি, ইউনাইটেড ফাইন্যান্স ১৯ কোটি ও আইপিডিসি সাড়ে তিন কোটি টাকা বিতরণ করেছে।
তবে গতকাল পর্যন্ত বিতরণের জন্য ১২৭ কোটি অনুমোদন করেছে আটটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান।
ঋণ বিতরণ বৃদ্ধির জন্য ২০টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডিদের সঙ্গে বৈঠকে বসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বৈঠকে আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ঋণ বিতরণে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এর আগে সম্প্রতি ৩০০ কোটি টাকা বেশি লক্ষ্যমাত্রা আছে এমন ২৬টি ব্যাংকের এমডিদের সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। বৈঠকে জানানো হয়, ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে মাত্র তিন হাজার ৭৩ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলো ৩১ অক্টোবরের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন গভর্নর।
কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবিলায় প্রায় এক লাখ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করে সরকার। এর মধ্যে সিএমএসএমই খাতের ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাদের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ ঋণ সুবিধার ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই তহবিলের অর্থের জোগান দিতে ১০ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ ঋণের সুদ ৯ শতাংশ হিসাব করা হলেও ঋণগ্রহীতাদের দিতে হবে ৪ শতাংশ সুদ। অবশিষ্ট ৫ শতাংশ সুদের অর্থ সরকার ভর্তুকি আকারে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে দিয়ে দেবে।
গত জুলাই পর্যন্ত এই তহবিল থেকে ব্যাংকগুলো মাত্র তিন হাজার ৭৩ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। নয় হাজার ৫৫০টি প্রতিষ্ঠান এই ঋণ পেয়েছে। নানা কারণে এই প্যাকেজের ঋণ বিতরণে গতি আসেনি। সিএমএসএমই খাতের ঋণ বিতরণে উৎসাহিত করতে খেলাপি করার সময়সীমা বাড়ানো, প্রভিশন ছাড় এবং ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম করাসহ ইতোমধ্যে নীতিমালার বিভিন্ন শর্ত শিথিল করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দেয়া হয়েছে নানা সুযোগ সুবিধা।
/এন এইচ