দেশজুড়ে

ক্ষমা চাইলেন শিক্ষক পেটানো সেই ইউপি চেয়ারম্যান

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ শিক্ষক পেটানোর ঘটনায় অবশেষে ক্ষমা চাইলেন গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ।

শুক্রবার সকালে ইউনিয়ন পরিষদ ভবন চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি শিক্ষক সমাজ ও ইউনিয়নবাসীর কাছে ক্ষমা চান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি লিখিত বক্তব্য পাঠ শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

লিখিত বক্তব্যে উত্তম কুমার বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের মাচারতারা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে পেটানোর ঘটনা নিয়ে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র হালদারের ভাই গজালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অমূল্য রতন হালদারের সঙ্গে ধারাবাশাইল বাজারে আমার কথা কাটাকাটি হয়।

‘একপর্যায়ে অমূল্য রতন হালদার আমার চেয়ারম্যানি নিয়ে ব্যঙ্গ করে এবং আমার বাব-মা তুলে গালি দেয়। তখন আমার ভাই মনি বাড়ৈর সঙ্গে সামান্য হাতাহাতি হয়। আমি তখন আমার ভাই মনিকে শান্ত করি। এই সামান্য ঘটনাটিকে আমার প্রতিপক্ষ লুফে নিয়ে শিক্ষক অমূল্য রতন হালদারের স্ত্রী মনি হালদারকে দিয়ে কোটালীপাড়া থানায় আমি ও আমার দুই ভাই এবং দুজন শিক্ষকসহ পাঁচজনকে আসামি করে একটি মিথ্যা মামলা করায়।’

তিনি বলেন, মামলাটিতে আমরা বর্তমানে জামিনে রয়েছি। আমি এ মিথ্যা মামলার হাত থেকে বাঁচতে পুলিশ প্রশাসনে হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে- মাচারতারা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র হালদার নিয়োগবাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম করেছেন। আমার স্ত্রী রীনা মণ্ডল ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি। আমার স্ত্রী প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় তিনি আমাদের বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হয়ে ভাইকে দিয়ে নাটক সাজিয়ে ভাইয়ের স্ত্রীকে দিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন।

পরিষদের ৯ জন ইউপি সদস্যের অনাস্থা প্রস্তাব দেয়ার বিষয়ে চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ বলেন, এই অভিযোগগুলো নিয়ে ছয় মাস আগেও আমার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছিল। সেসব অভিযোগ তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।

ইউপি সদস্যদের বিভিন্ন অনিয়মের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমি সদস্যদের বিভিন্ন অনিয়মে বাধা দেয়ায় তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। আমি এসব অভিযোগ সুষ্ঠু তদন্তের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

শিক্ষক পেটানোর অভিযোগ উল্লেখ করে উত্তম কুমার বাড়ৈ বলেন, আমার ভাই মনি বাড়ৈর সঙ্গে ধারাবাশাইল বাজারে বসে শিক্ষক অমূল্য রতন হালদারের যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে তার জন্য আমি শিক্ষক সমাজ ও কান্দি ইউনিয়নবাসীর কাছে ক্ষমা প্রার্থী।

সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈর স্ত্রী জেলা পরিষদ সদস্য রীনা মণ্ডল, ইউপি সদস্য সিদ্ধার্থ বাড়ৈ, প্রভাষ বৈরাগী, মনজু হালদার, শিক্ষক ভবতোষ বাড়ৈ, রমেন মণ্ডল উপস্থিত ছিলেন।

মাচারতারা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রমেন মণ্ডল বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র হালদারের বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদ করায় আমাদের দুই ভাইকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এই মিথ্যা মামলা থেকে বাঁচতে আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close