প্রধান শিরোনামবিশ্বজুড়ে

ক্ষমতা ধরে রাখতে সংবিধান সংশোধনের পথে হাঁটছেন মোদি!

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দীর্ঘদিন ধরে চালু করতে চেয়েছেন ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি। তার সরকার এবার সেই লক্ষ্যপূরণে আরও একধাপ এগিয়ে সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুন মেঘাওয়াল লোকসভায় দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পেশ করেছেন । এর মধ্যে রয়েছে ১২৯তম সংবিধান সংশোধন বিল এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আইন সংশোধন বিল।

বিরোধীরা একযোগে এই দুই বিলের বিরোধিতা করেছেন। তাদের দাবি, এই বিল ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ও সংসদীয় গণতন্ত্রের মূল আদর্শের পরিপন্থী। বিরোধীদের ভাষায় মোদি সরকার এভাবে দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েমের চেষ্টা করছে।

কংগ্রেস, তৃণমূল, ডিএমকে, এবং বামদলগুলো থেকে শুরু করে বেশিরভাগ বিরোধী দল এই বিলকে ভারতের বহুত্ববাদী ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য হুমকি বলে অভিহিত করেছে। বিরোধীদের আরও অভিযোগ করে বলেন, সংবিধান সংশোধনের জন্য দুই কক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থনের পাশাপাশি রাজ্যগুলোর অনুমোদন প্রয়োজন। কিন্তু বিজেপির সে সমর্থন নিশ্চিত নয়।

বিল পেশের সময় আইনমন্ত্রী মেঘাওয়াল বলেছেন, এই বিল নির্বাচনী সংস্কারের অংশ। একসঙ্গে সব নির্বাচনের ফলে সরকারের বিপুল অর্থ সাশ্রয় হবে, উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হবে না। সেই সাথে দেশের অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে। বিজেপি মনে করে, বছরের বিভিন্ন সময়ে ভোটের কারণে বারবার আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর হলে উন্নয়নমূলক প্রকল্প থমকে যায় এবং প্রকল্পের খরচ বেড়ে যায়।

এদিকে ভারতের সংবিধান সংশোধন অত্যন্ত কঠিন। দুই কক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের অনুমোদনের পাশাপাশি দেশের অর্ধেক রাজ্যের সমর্থন প্রয়োজন। রাজ্যসভায় বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় এই বিল পাস হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। তা সত্ত্বেও মোদি সরকার বিলটি যুগ্ম সংসদীয় কমিটিতে (জেপিসি) পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই কমিটিতে বিজেপি-সমর্থিত সদস্যদের সংখ্যাধিক্যের ফলে বিলটি সহজেই পাশ হতে পারে।

যদি এই বিল পাস হয়, তবে ২০৩৪ সালের আগে এটি কার্যকর হবে না। বিরোধীদের দাবি, এই বিল মূলত মোদি সরকারের রাজনৈতিক অভিসন্ধি চরিতার্থ করার হাতিয়ার। বিজেপি সরকার ‘রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা’ ও ‘অর্থনৈতিক অগ্রগতি’র কথা বলে আসলে কেন্দ্রীয় ক্ষমতা আরও দৃঢ় করতে চাইছে।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close