ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে কুরবানি সর্বোত্তম ইবাদত। কুরবানির পর পশুর চামড়া বিক্রি করে অর্জিত অর্থ খরচ করার খাত কোনটি? চামড়া ব্যবহার কিংবা চামড়ার অর্থ খরচের ব্যাপারে ইসলামের দিক-নির্দেশনাই বা কী?
কুরবানির পর কোনো ব্যক্তি যদি মনে করে যে, চামড়া নিজে ব্যবহার করবে তবে তা উত্তম। কুরবানিকারী ব্যক্তি ইচ্ছা করলে নিজের কুরবানির চামড়া দাবাগত করে তা ব্যবহার করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুরবানির চামড়া সম্পর্কে বলেছেন, ‘ তোমরা কুরবানির পশুর চামড়া দ্বারা উপকৃত হও; তবে তা বিক্রি করে দিও না।’
কুরবানির চামড়া বিক্রি
আর যদি কুরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করা হয়; তবে সে অর্থ কুরবানিকারী ব্যক্তি খরচ তথা ভোগ করতে পারবে না। কুরবানির চামড়া বিক্রিত অর্থ গরিব-মিসকিনদের মাঝে বিতরণ করে দিতে হবে।
হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘আমি যেন কুরবানির মজুরি বাবদ গোশত বা চামড়া থেকে কসাইকে কোনো কিছু প্রদান না করি।’
কুরবানির চামড়ার অর্থ পাবে যারা
ইসলামের নির্দেশনা হলো- যারা জাকাত, ফিতরা পাওয়ার উপযুক্ত তারাই কুরবানির চামড়ার অর্থ পাওয়ার সর্বোত্তম হকদার। তবে এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে সে সব ব্যক্তি যারা গরিব, অসহায় কিংবা ইয়াতিম। অর্থাভাবে ইলমে দ্বীন শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। তাদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কুরবানির চামড়ার অর্থ দেয়া যাবে।
যারা সদকা বা জাকাত পাওয়ার যোগ্য তারাই কুরবানির চামড়ার অর্থ পাবে। আল্লাহ বলেন-
‘সদকা হল শুধু ফকির, মিসকিন, সদকা (জাকাত) আদায়কারী কর্মচারী ও যাদের চিত্ত আকর্ষণ করা হয় (গরিব নব মুসলিম) তাদের হক এবং তা (সেই) ক্রীতদাস (যার) মুক্তির জন্যে (অর্থের প্রয়োজন) ঋণগ্রস্তদের জন্যে(যারা এমন গরিব যে ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না), আল্লাহর পথে জেহাদকারীদের জন্যে এবং মুসাফিরদের জন্যে। এই হল আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা তাওবা : আয়াত ৬০)
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় সুনানে আবু দাউদ হজরত যিয়াদ ইবনে হারিস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে উপস্থিত হয়ে তাঁর হাতে বাইআত গ্রহণ করেছি। এমন সময় একটি লোক এসে তাঁর কাছে আবদেন করে- ‘সদকার (জাকাতের) মাল থেকে আমাকে কিছু দান করুন।’
তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘সাদকার ব্যাপারে আল্লাহ নবী বা অন্য কারো ইচ্ছার ওপর সন্তুষ্ট নন, বরং তিনি (আল্লাহ) নিজেই তা বন্টনের আটটি ক্ষেত্র নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সুতরাং যদি তুমি এ ৮টি ক্ষেত্রের কোনো একটির মধ্যে পড় তবে আমি তোমাকে দিতে পারি।’
সুতরাং যেহেতু কুরবানির চামড়া বিক্রি করলে মালিক তার ব্যবহার করতে পারবে না আর তা দান করতে হয়। তাই দান গ্রহণের উপযুক্ত ব্যক্তিরই তা পাবে। এটাই ইসলামের নির্দেশনা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরবানির চামড়ার অর্থ জাকাতের আট খাতের ব্যক্তিদেরকে দান করার তাওফিক দান করুন। বিশেষ করে গরিব ইয়াতিম ইলমে দ্বীনের শিক্ষার্থীদের দান করার তাওফিক দান করুন। আমিন।