প্রধান শিরোনামবিশ্বজুড়ে
কাবুল বিমানবন্দরে আইএস’র হামলার আশঙ্কায় সতর্কতা জারি
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: ইতোমধ্যে তালেবান পুরো আফগান দখলে নিয়ে নিয়েছে। কাবুল বিমান বন্দর এখনও দখলে রয়েছে মার্কিন বাহিনীর হাতে। তবে কাবুল বিমানবন্দরে সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় সেখানে না যেতে নাগরিকদের প্রতি সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ তাদের মিত্র দেশগুলো। জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট হামলা চালানোর হুমকি দেয়ায় এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এরমধ্যেই, কাবুল বিমানবন্দরে দেশ ত্যাগে আফগানদের হিড়িক বেড়েই চলেছে।
দেশটিতে এখনো দশ হাজারের বেশি আফগান বিমানবন্দরে দেশ ত্যাগের অপেক্ষায় রয়েছেন। ৩১ শে আগস্টের আগে বিদেশি ও আফগান নাগরিকদের কাবুল বিমান বন্দর ত্যাগে তালেবান কোনো বাঁধা না দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে দাবি যুক্তরাষ্ট্রের। এদিকে, তালেবানকে রুখতে পাঞ্জশিরে একাট্টা হয়েছে সরকারি বাহিনী ও স্থানীয় সশস্ত্রগোষ্ঠীগুলো।
কোনভাবেই থামছে না দেশ ত্যাগে মরিয়া আফগানদের ভিড়। বুধবারও কাবুল বিমান বন্দরে বিদেশি ও সাধারণ আফগানদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।
৩১শে আগস্ট সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে আতঙ্ক ও দেশ ছেড়ে যাওয়ার হিড়িক। যুক্তরাষ্ট্রের হিসাব মতে ১৪ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত ৮২ হাজারের বেশি মার্কিন ও আফগান নাগরিক কাবুল ছাড়তে সক্ষম হয়েছে।
যতই দিন গড়াচ্ছে ততই আফগানদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। উত্তাল আফগানিস্তান থেকে নিজেদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়া অব্যাহত রেখেছে মেক্সিকো, লিথুয়ানিয়াসহ বিভিন্ন দেশ।
কাবুল বিমান বন্দরে মানবেতর পরিস্থিতি তৈরি হলেও তালেবানের হাতেই নিজেদের সপে দিতে শুরু করেছেন অনেক আফগান নাগরিক। তালেবানের হাতে আফগানিস্তান চলে যাওয়ার দুসপ্তাহ হতে চলেছে। নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন তারা। তবে দশদিন ধরে ব্যাংক বন্ধ থাকায় অর্থনৈতিক মন্দার পাশাপাশি খাদ্য সঙ্কট চরমে পৌঁছেছে।
তালেবানের হাতে শাসনভার চলে গেলেও তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করছেন কাবুলের উত্তরাঞ্চলের পাহাড়ি এলাকা পাঞ্জশিরের মানুষ। এরইমধ্যে সরকারি বাহিনীর অবশিষ্ট সদস্যদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে অঞ্চলটির তালেবানবিরোধী সশস্ত্রগোষ্ঠীগুলো। পাঞ্জশিরে তালেবানের বিরুদ্ধে তারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
পাঞ্জশিরের স্থানীয়রা বলছেন, ‘বর্তমানে আমরা পাঞ্জশিরের সম্মুখভাগে রয়েছি। আমরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। আমরা যে কোনো মূল্যে তালেবানকে প্রতিহত করবো।’
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের মেয়াদ শেষ হলে আফগান ছাড়তে ইচ্ছুক নাগরিকদের ভবিষ্যৎ কী হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এ বিষয়ে জো বাইডেন প্রশাসন বিকল্প পথ খুঁজছে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। তবে মার্কিন সেনাদের আফগান ত্যাগের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আফগানিস্তান ছাড়তে ইচ্ছুক কাউকেই তালেবান সদস্যরা কোনো ধরনের বাধা না দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিঙ্কেন। ৩১শে আগস্টের পরও আফগানদের দেশ ত্যাগে সুযোগ দিতে তালেবানকে চাপ দেয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও।
এদিকে, ৩১ শে আগস্টের পর মার্কিন সেনারা আফগানিস্তান ত্যাগের পর কাবুল বিমান বন্দরে তুর্কি সেনারা অবস্থান নেবে বলে জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট দফতর। বিমান বন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে তালেবানের পক্ষ থেকে তুরস্ককে অনুরোধ করা হয় বলে দাবি আঙ্কারার।
/ আর এইচ এস