গার্মেন্টসদেশজুড়েশিল্প-বানিজ্য

কাপড় উৎপাদনে শীর্ষে নরসিংদী

দেশে কাপড়ের চাহিদার প্রায় ৭০ ভাগই যোগান দেয় নরসিংদীর কারখানাগুলো

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: দেশি কাপড় তৈরিতে শীর্ষে নরসিংদী। এ জেলার সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নে বৃহস্পতি থেকে শনিবার সপ্তাহের এই তিন দিন পাইকারি কাপড় বিক্রির হাট বসে। এ ইউনিয়নেই রয়েছে দেশে উৎপাদিত কাপড় বিক্রির সবচেয়ে বড় পাইকারি হাট ‘শেখেরচর-বাবুরহাট’।

সড়কপথে ঢাকা থেকে বাবুরহাটের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। প্রায় পুরো জেলাতেই আছে সুতা থেকে কাপড় তৈরির কারখানা পাওয়ার লুম (বিদ্যুৎ চালিত তাঁত)। আগে হাতে তাঁত চালিয়ে সুতা থেকে কাপড় তৈরি করা হতো, এখন বিদ্যুৎ চালিত যন্ত্রে চলে কাপড়ের বুনন।

নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এনসিসিআই ) তথ্য অনুযায়ী, শাড়ি, লুঙ্গি, মেয়েদের থ্রিপিস, বিছানার চাদর, গামছা, রুমালসহ দেশের কাপড়ের চাহিদার প্রায় ৭০ ভাগ উৎপাদিত হয় এ জেলার বিভিন্ন কারখানায় যার বেশির ভাগ বিক্রি হয় বাবুরহাটে।

নরসিংদী চেম্বারের সাবেক সভাপতি এবং বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সহসভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, কাপড় উৎপাদনের কারখানাগুলো গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, নরসিংদী, সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল জেলায় অবস্থিত। এর মধ্যে গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামের প্রায় সব কারখানার কাপড়ই বিদেশে রপ্তানি হয়। সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইলে উৎপাদিত হয় স্বল্প পরিসরে। নরসিংদীতে যে কাপড় উৎপাদিত হয়, তার বেশির ভাগই দেশে, বিশেষ করে বাবুরহাটে বিক্রি হয়।

আবদুল্লাহ আল মামুন আরও জানান, নরসিংদী জেলায় ছোট-বড় মিলে প্রায় তিন হাজার শিল্পকারখানা রয়েছে। এর বাইরেও আছে টেক্সটাইল, ডাইংয়ের (সুতা-কাপড় রং করা) মতো কারখানাও। এসব কারখানায় দেড় থেকে দুই লাখ শ্রমিক কাজ করেন।

জেলা কার্যালয়ের উপমহাপরিদর্শক আতিকুর রহমান জানান, নিবন্ধিত কারখানার মধ্যে ১ হাজার ৪০১টি পাওয়ার লুম, ৮টি তৈরি পোশাক কারখানা, ৮টি জুট মিল, ৬-৭টি স্পিনিং মিল আছে। তবে নিবন্ধিত কারখানার সংখ্যার চেয়ে বাস্তবে আরও বেশি কারখানা রয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।

প্রায় ৭৯ বছর আগে দেশে কাপড়ের সবচেয়ে বড় পাইকারি হাটটি (বাবুরহাট) হয়েছে। জেলায় ব্যবসার পরিবেশ ভালো বলে জানান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। গ্যাস, পানি, বিদ্যুতের সংকটও নেই। তবে বাবুরহাটে বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা হয়। এছাড়া হাটের দিন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা কয়েক শ ট্রাক পার্ক করার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা নেই। বেশির ভাগ ট্রাক মহাসড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকায় যানজট হয়। এ বিষয়ে সরকারের নজর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তারা।

নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের বর্তমান সভাপতি মো. আলী হোসেন বলেন, ব্যবসা–বাণিজ্যের প্রসারে সরকারি উদ্যোগে এখানে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন ও দুটি কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার (সিইটিপি) নির্মাণ প্রয়োজন। ইতোমধ্যে জেলার মনোহরদীতে বিসিক শিল্পনগরীর সম্প্রসারণ হচ্ছে, বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠান একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার অনুমোদন পেয়েছে বলেও জানান তিনি।

/এএস

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close