প্রধান শিরোনামবিশ্বজুড়ে

কাজের লোভ দেখিয়ে বানানো হচ্ছে পতিতা!

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: আমার নাম গ্রেস। আমি একজন সঙ্গীত শিল্পী, নৃত্যশিল্পী এবং অভিনেত্রী। আমি একদিন অনেক নাম করবো। খুব সুন্দর একটা জীবন হবে আমার।

কিছু দিন আগে এক বন্ধুর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে একটি পোস্ট দেখেছিলেন গ্রেস। ভারতে কাজের সুযোগ সম্পর্কে লেখা ছিল সেই পোস্টে।

শুনলাম যে ভালো অর্থ উপার্জনের সুযোগ আছে ভারতে। তো আমি সুযোগটা নিতে চাইলাম।

কিন্তু দিল্লি এসে পৌঁছনোর পর গ্রেস বুঝতে পারলো যে একটা দুঃস্বপ্নের মধ্যে বন্দি হয়ে পরেছে সে।

কাজের প্রতিশ্রুতি পেয়ে দিল্লিতে আসা নারীরা নিজেরা যখন এই চক্রের কাছে অর্থের জন্য আটকে পড়েন, তখন তারা হয়ে ওঠেন যৌনকর্মী। ধীরে ধীরে একপর্যায়ে তারাও হয়ে ওঠেন ম্যাডাম, যারা অন্য নারীদের যৌন কর্মী হিসেবে কাজে লাগান।

আফ্রিকার দেশ থেকে ভারতে নারী পাচারের চক্র গড়ে উঠেছে বলে সম্প্রতি বিবিসির আফ্রিকা আই-অনুষ্ঠানের এক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।

কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আফ্রিকার নানা দেশ থেকে নারীদের ভারতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিন্তু তাদের সেখানে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে।

গ্রেস ভারতে এসে পৌঁছানোর পর তাকে একটি যৌন পল্লীতে নিয়ে যাওয়া হলো। গোল্ডি নামের একজন নারী সেখানে তার পাসপোর্ট কেড়ে নিলো।

এই নারী ভারতে আসার জন্য তার খরচ বহন করেছে। গ্রেসকে জানালো হলো, তাকে ভারতে আনতে গোল্ডির খরচ হয়েছে প্রায় চার হাজার মার্কিন ডলার, ভারতে আসার প্লেন টিকিটের যে খরচ তার চেয়ে সাতগুণ বেশি।

এখন গোল্ডিকে এই অর্থ পরিশোধ করার জন্য গ্রেসের সামনে একটাই পথ খোলা ছিল।

“পতিতাবৃত্তি আমার কাছে এমন একটা কাজ, আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে বলতাম, এটা যেন কাজ হিসেবে আমার সামনে পৃথিবীর শেষ বিকল্প হয়।”

পাঁচ মাস ধরে গ্রেস আরো চারজন পাচারের শিকার নারীর সাথে একটা ছোট ঘরে থাকতে বাধ্য হন।

পাচার করে নিয়ে আসা মেয়েদের খদ্দের নিয়ে আসার জন্য পাঠানো হতো কিছু স্থানীয় অবৈধ বারে। যেখানে সাধারণত দিল্লিতে কর্মরত আফ্রিকান পুরুষরা যেতে পছন্দ করেন।
এই জায়গাটি ছিল এই নারী পাচার ও যৌন ব্যবসার কেন্দ্র।

“প্রথম দিন যেদিন সেখানে আমি গিয়েছিলাম, দেখলাম সেখানে অনেক, অনেকগুলো মেয়ে… অনেক মেয়ে। আমাদের কাজ ছিল, একটা জায়গায় বসতে হবে, তারপর একজন পুরুষ এসে আমাকে পছন্দ করে নিয়ে যাবে।”

/এনএ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close