বিশ্বজুড়েস্বাস্থ্য

করোনার মহামারি; কুম্ভমেলাতেই সর্বনাশ ভারতের!

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল ভারত। বর্তমানে ভারতের করোনা পরিস্থিতি যে জায়গায় পৌঁছেছে, তাতে স্তম্ভিত গোটা বিশ্ব। প্রখ্যাত মেডিকেলবিষয়ক জার্নাল ‘দ্য ল্যানসেট’ এই ভয়াবহ দুর্যোগের জন্যে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করার পাশাপাশি রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় সমাগমকেও দায়ী করেছে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি জানায়, এপ্রিল মাসে ভারত যখন করোনাভাইরাসের বিধ্বংসী দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে লড়াই করছে, তার মধ্যেই হরিদ্বারে কুম্ভ মেলায় লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ হিন্দু সমবেত হয়েছিল। ভারতের অধিকাংশ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আশঙ্কা করে জানিয়েছিলেন, এই কুম্ভ মেলা এক ‘সুপার-স্প্রেডার ইভেন্ট’ অর্থাৎ করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়ানোর এক বড় অনুষ্ঠানে পরিণত হবে।

সেই আশঙ্কাই সত্যি হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা খবরে জানা গেছে, কুম্ভ মেলা থেকে ফিরে আসা লোকজনকে পরীক্ষা করে কোভিড সংক্রমণ ধরা পড়ছে এবং তারা সম্ভবত আরও লোকজনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে দিয়েছে।

রোগতত্ত্ববিদ ডা. ললিত কান্ত বিবিসিকে জানান, ‘মাস্ক না পরে তীর্থযাত্রীদের বড় বড় দল যখন নদীর তীরে দাঁড়িয়ে গঙ্গার বন্দনা করছে তখন আসলে এটি দ্রুত ভাইরাস ছড়ানোর এক আদর্শ পরিবেশ তৈরি করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আর এই সংখ্যাগুলো আসলে ভাসমান বরফখণ্ডের চূড়া মাত্র। এই তীর্থযাত্রীরা যখন দলবেঁধে ভিড়ের মধ্যে ট্রেনে-বাসে ভ্রমণ করছে, তখন কিন্তু তারা সংক্রমণের হার বাড়িয়ে দিচ্ছে কয়েকগুণ। আমি কোনো দ্বিধা ছাড়াই বলতে পারি, ভারতে যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এত বাড়ছে, তার একটা প্রধান কারণ এই কুম্ভমেলা।’

হরিদ্বারের কর্মকর্তারা জানান, সেখানে ২ হাজার ৬৪২ জন তীর্থযাত্রী দেহে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছিল, যাদের মধ্যে কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় ধর্মীয় নেতাও ছিলেন। এছাড়া বলিউডের সংগীত পরিচালক শ্রাবণ রাঠোরও এই কুম্ভমেলা থেকে ফেরার কদিন পর মুম্বাইয়ের এক হাসপাতালে মারা যান।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close