দেশজুড়েপ্রধান শিরোনামবিশেষ প্রতিবেদন

করোনার পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন নেয়া প্রথম বাংলাদেশি তিনি

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ রাহাত আহমেদ রাফি। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে যান আবুধাবি। সেখানে ভাইয়ের সঙ্গে মিলে ব্যবসা শুরু করেন তিনি। আবুধাবি যাওয়ার আগে বাংলাদেশে থাকার সময় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এই তরুণ। এর ধারাবাহিকতায় আবুধাবিতে গিয়েও রেড ক্রিসেন্টের সঙ্গে যুক্ত হন। এরইমধ্যে করোনা পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিন আবিষ্কারে কাজ শুরু করে বিভিন্ন দেশ। চীনের তৈরি ভ্যাকসিন পরীক্ষা চলছে আবুধাবিতে।

চীনা কোম্পানি সিনোফার্মের সঙ্গে যৌথভাবে আবুধাবির স্বাস্থ্য অধিদফতর এ পরীক্ষা শুরু করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে সেই টিকা উদ্ভাবনে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন রাহাত আহমেদ রাফি। করোনার পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন নেয়া প্রথম বাংলাদেশি তিনি।

রাহাত আহমেদ রাফি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার লক্ষি প্রসাদ পশ্চিম ইউপির আব্দুল মতিনের ছেলে। তিনি আবুধাবিতে ব্যবসা করছেন। ছয় বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তৃতীয় রাফি। প্রবাসে থেকেও মানবসেবায় এগিয়ে এসেছেন এই তরুণ। অংশ নিয়েছেন করোনার ভ্যাকসিন উদ্ভাধনের পরীক্ষায়। পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা জানালেন তিনি।

রাফি বলেন, করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিনের জন্য স্বেচ্ছাসেবী চাওয়া হচ্ছে বলে প্রথমে জানতে পারি। এতে আমিও ইচ্ছুক হই। মানবসেবায় অংশ নেয়ার সুযোগ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ইন্টারনেটে নাম তালিকাভুক্ত করি। এরপর কয়েকদিন পরেই আমার সঙ্গে আবুধাবির স্বাস্থ্য অধিদফতর যোগাযোগ করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে। পরে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয়।

তিনি বলেন, আমি শারীরিকভাবে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন পরীক্ষার জন্য ফিট হই। পরে ২৪ জুলাই আমার শরীরে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেয়া হয় এবং ২১ দিন পর ১৫ আগস্ট সকালে দ্বিতীয় ডোজ দেয়। আমার জানামতে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে আমিই করোনার ভ্যাকসিন পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি।

বাংলাদেশি এই তরুণ আরো বলেন, প্রথম থেকেই আমার কোনো ভয় লাগেনি। প্রথম প্রথম একটু মাথা ঘুরানো ছাড়া আর কোনো সমস্যা হয়নি। বর্তমানে আমি সুস্থ। তবে এই ভ্যাকসিনের প্রতিক্রিয়া হিসেবে কোনো কিছু হলেও আমার আফসোস নেই। আজ হোক কাল হোক এমনিতেই মারা যেতে হবে। যিদি করোনার মতো এমন কঠিন পরিস্থিতে কোটি কোটি মানুষের নিরাপত্তার জন্য সামান্যতম অবদান থাকে সেটাই আমার কাছে জীবনের সার্থকতা।

রাহাত আহমেদ রাফি বলেন, ভ্যাকসিন দেয়ার পর থেকেই দেশটির স্বাস্থ্য অধিদফতর সময়ে সময়ে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছে। জেনেছি আগামী এক বছর এভাবেই খবর রাখবে। নিয়মিত নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে তিনদিন পরপর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হচ্ছে।

স্থানীয় সংবাদপত্রের বরাত দিয়ে রাফি জানান, আবুধাবি এবং আল আইন শহরে পরীক্ষায় অংশ নিতে সাত হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী নাম তালিকাভুক্ত করেন। সব মিলিয়ে ১৫ হাজার মানুষের ওপর পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। এখানে প্রথম ভ্যাকসিন নিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রধান। আমার জানামতে আমিই একমাত্র বাংলাদেশি।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close