দেশজুড়েবিশেষ প্রতিবেদন
করোনাকালেও সুন্দরবনে ২০০ টন মধু আহরণ
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মৌয়াল আব্দুর রশিদ বলেন, চড়া সুদে লাখ টাকা ঋণ নিয়ে নৌকা ভাড়া করে আমরা একটি দল বনে প্রবেশ করি। এরপর বহু কষ্টে মধু আহরণ করি। সুন্দরবন থেকে আমাদের আহরিত মধু পাইকারি দামে কিনে নেন মহাজন। এতে আমরা ন্যায্য দাম পাই না।
তিনি আরো বলেন, মহাজন প্রতি কেজি খলিশা ফুলের মধুর দাম দেয় ৩৫০-৩৮০ টাকা। আর বাইন, গিবো ও গরান ফুলের মধুর দাম দেয় ৩০০-৩৫০ টাকা। অথচ এই মধু বাজারে বিক্রি হয় ৭০০-৮০০ কিংবা ১০০০ টাকা কেজিতে।
শ্যামনগর সদরের মধু বিক্রেতা শাহিনুর রহমান বলেন, মধু সংগ্রহের মৌসুমে যখন মৌয়ালরা বন বিভাগ থেকে পাস নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করে তখন আমি তাদের সুদে টাকা দেই। তারা ফিরে আসার পর মধু ভাগাভাগি হয়। টাকা দেয়ার কারণে একভাগ আমি পাই। এছাড়া বাকি মধু আমি মৌয়ালদের কাছ থেকে কিনে নেই।
এ মধু বিক্রেতা বলেন, সুন্দরবনের খাঁটি এ মধু অনলাইন অর্ডার ও মোবাইলে যোগাযোগ করে পাইকারি দামে কিনে নেন ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ব্যবসায়ীরা। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেয়া হয় এসব মধু। এছাড়া স্থানীয় কিছু ক্রেতাও মধু সংগ্রহ করেন। আমি প্রতিদিন ৪০-৬০ কেজি বিক্রি করি।
তিনি আরো বলেন, সুন্দরবনের খলিশা ফুলের মধু প্রতি কেজি পাইকারি বিক্রি হয় ৭০০ টাকা, বাইন ফুলের মধু ৬০০ টাকা, গরান ফুলের মধু ৫৫০ টাকা। এছাড়া গোপালগঞ্জ থেকে সংগ্রহ করা কালোজিরা ফুলের মধু বিক্রি হয় পাইকারি প্রতি কেজি ৭৫০ টাকায়।
সাতক্ষীরা জেলা বাজারজাতকরণ কর্মকর্তা সালেহ মো. আব্দুল্লাহ বলেন, সুন্দরবন থেকে সংগৃহীত মধু ও মোম ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিভিন্ন কোম্পানি কিনে নেয়। খুচরা ব্যবসায়ীদের হাতেও কিছু চলে যায়। সরকারিভাবে মধুর দাম নির্ধারণ করা নেই। এ কারণে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো দাম নির্ধারণ করে মধু সংগ্রহ ও বিক্রি করেন।
সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের বন কর্মকর্তা আবুল হাসান জানান, সাতক্ষীরার সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকায় মৌয়াল রয়েছেন প্রায় পাঁচ হাজার। এ বছর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে মধু সংগ্রহে কোনো প্রভাব পড়েনি। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করেই মৌয়ালদের সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়।
/এন এইচ