করোনাকৃষিপ্রধান শিরোনামশিল্প-বানিজ্য
করলার কেজি দুই টাকা, দিশেহারা কৃষক
এনায়েতুর রহমান, ময়মনসিংহঃ ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে বাকতা, কালাদহ, এনায়েতপুর ও রাঙামাটিয়া ‘সবজি গ্রাম’ হিসেবে পরিচিত। এখানকার উৎপাদিত ফসল করলা ও শাক-সবজি এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয় নিয়মিত। এবার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস।
বিগত বছর করলা চাষ করে অনেকে লাভবান হয়ে দ্বিগুণ উৎসাহে এবার করলা চাষ করে ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষক।
৩০ টাকা কেজির করলা এখন বিক্রি হচ্ছে দুই টাকা দরে। কালাদহ গ্রামের করলাচাষি ছাত্তার জানান, তিনি তিন কাঠা জমিতে করলা আবাদ করেছেন। করলার বাজার ধসে এ পর্যন্ত তিনি বিক্রি করেছেন ৩/৪ হাজার টাকা। যা খেতে সার প্রয়োগের টাকাও হচ্ছে না।
করলা পাইকার বেলায়েত হোসেন বলেন, তিনি কালাদহ বাজার থেকে ১৫ বছর ধরে সবজি ঢাকার কাওরান রাজারে বিক্রি করেন। এবারের মতো বাজার ধস আর কখনো হয়নি।
সরাতিয়া গ্রামের কৃষক খলিল বলেন, বাক্তা বাজারে একমণ করলা বিক্রি করছি ১৪০ টাকা, ভ্যান ভাড়া দিছি ৬০ টাকা। আগে বাড়িতে পাইকার আসতো, এখন বাজারে নিয়ে গেলেও সবজি নেয় না। একই অবস্থায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকের। সবজি চাষীরা করোনায় আক্রান্ত না হলেও আর্থিকভাবে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এ বছর ফুলবাড়ীয়ায় করলা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা ছিল ৬৪২ একর জমি। আবাদও তেমনি হয়েছিল কিন্তু ফলন হলেও মহামারি করোনার প্রভাব পড়ায় দামে ধ্বস নেমেছে। এতে কৃষক অর্ধেক খরচও উঠাতে পারবে না। কেননা চৈত্র ও বৈশাখ মাসেই করলা ফলনের উত্তম সময়। চলতি বছর এ সময়টাতে করোনার আক্রমন শুরু। ফলে বাজারে অতিতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে বাজারে ধ্বস নামে।
কালাদহ গ্রামের সেলিম রেজা নামের এক কৃষক জানান, ঘন্টায় ঘন্টায় বাজারে দর পতন হয় গতকাল সকাল ৮টায় কালাদহ বাজারে করলা ২ টাকা কেজি সকাল সাড়ে ৯টায় সেই করলা দেড় টাকায় বিক্রি হয়।। তবে এ বছর আর করলা চাষের খরচ উত্তোলন করা সম্ভব নয়। আমরা খুবই দু:চিন্তায় আছি। সরকারীভাবে বিশেষ প্রণোদনা না দিলে আমাদের এ ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার কোন সুযোগ নেই।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জেসমিন নাহার ঢাকা অর্থনীতিকে জানান, করলাচাষিরা দাম না পেয়ে হতাশ। যারা ত্রাণ দিচ্ছে তারা যদি চালের সঙ্গে পুষ্টিকর সবজি বাজার থেকে কিনে তাহলে কৃষক কিছুটা রক্ষা পান।
এনায়েত/আরএম