জীবন-যাপনবিশ্বজুড়ে

এলিয়েনদের পাঠানো বার্তা

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক : সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিজ্ঞানীরা সৌরজগতের বাইরে অনেক গ্রহের (এক্সোপ্লানেট) সন্ধান পেয়েছেন। সেসব গ্রহের মধ্যে কোনোটিতে প্রাণ কিংবা আরেকটু এগিয়ে বললে মানুষের চেয়েও বুদ্ধিমান প্রাণীর অস্তিত্ব রয়েছে কি না, বিজ্ঞানীরা অনুসন্ধান চালাচ্ছেন তারও। এরই মধ্যে নতুন একটি গবেষণাপত্র জানাচ্ছে, পৃথিবীর মতো বাসযোগ্য গ্রহ আরও রয়েছে মহাবিশ্বে। এমনকি সেসব গ্রহের কোনো কোনোটি পৃথিবীর চেয়েও বেশি বাসযোগ্য।

সম্প্রতি এই গবেষণাপত্র স্পেনের বার্সেলোনায় গোল্ডস্মিথ ভূ-রসায়ন কংগ্রেসে উপস্থাপন করা হয়েছে। গবেষণা দলের প্রধান স্টেফানি ওলসন জানান, আমরা গবেষণার মাধ্যমে একটা চমকপ্রদ উপসংহারে এসেছি। আর তা হলো, পৃথিবীর বাইরে কোনো কোনো গ্রহের পরিবেশ জীবের টিকে থাকার জন্য দারুণ অনুকূলে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সেসব গ্রহে মহাসাগরের মতো ঘূর্ণন প্যাটার্ন দেখা গেছে। সেসব ঘূর্ণন প্যাটার্নের কোনো কোনোটি প্রাণের বিকাশের জন্য পৃথিবীর চেয়েও বেশি অনুকূল বলে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে মনে হচ্ছে। এটি আরও দেখাচ্ছে, ওই সব গ্রহের মহাসাগরে জীবের টিকে থাকার উপাদানের প্রাচুর্য আমাদের পৃথিবীর চেয়েও বেশি।

বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন পর্যবেক্ষণের সমন্বয় করে এখন বোঝার চেষ্টা করছেন, দূরবর্তী সেসব গ্রহের কোনোটিতে এলিয়েন রয়েছে কি না। নাসার সফটওয়্যার ব্যবহার করে একটি ভার্চ্যুয়াল মডেল তৈরি করে গ্রহগুলোর ঘূর্ণন গতির সাহায্যে তার বায়ুমণ্ডল ও জলবায়ু বাসযোগ্য কি না, তা বুঝতে চেষ্টা করা হচ্ছে।

ওলসন জানান, ‘পৃথিবীর মহাসাগরগুলোতে জীবন নির্ভর করে সাগরের পানির ওপরে উঠে আসার প্রবাহ বা আপওয়েলিংয়ের ওপর। এর মাধ্যমে মহাসাগরের গভীর অন্ধকার অংশ থেকে পুষ্টি উপাদান ওপরে সূর্যালোক পৌঁছাতে সক্ষম এমন অংশে উঠে আসে। এই অংশেই সালোকসংশ্লেষী জীবেরা থাকে। মহাসাগরের এই আপওয়েলিং পরিবেশই আমরা এক্সোপ্লানেটে খুঁজে দেখছি। প্রাণের বিকাশ সেখানে বেশি, যেখানে বায়ুমণ্ডলের ঘনত্ব বেশি, ঘূর্ণন গতি কম ও আপওয়েলিং হার বেশি।’

এদিকে পৃথক একটি গবেষণা জানিয়েছে, পৃথিবীর বাইরে অন্য ছায়াপথ থেকে পৃথিবীতে বেতার সংকেত আসছে। বাইরের মহাবিশ্ব থেকে পৃথিবীতে অসংখ্য সংকেত পাঠানো হচ্ছে, যেগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটির আবার পুনরাবৃত্তি (রিপিটিং) হচ্ছে। গবেষকেরা এ রকম আটটি ‘রিপিটিং শক্তিপ্রবাহ’ শনাক্ত করেছেন, যা প্রবাহিত হচ্ছে অন্য মহাবিশ্ব থেকে। কানাডীয় হাইড্রোজেন ইনটেনসিটি ম্যাপিং এক্সপেরিমেন্ট টেলিস্কোপে নতুন এই তথ্য ধরা পড়েছে। এ-সংক্রান্ত গবেষণাটি আর্কিভ গবেষণা সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে গত সপ্তাহে।

এই বেতার সংকেতগুলোকে ফাস্ট রেডিও বার্স্টস (এফআরবি) বলা হচ্ছে। এসব রেডিও সংকেতের উৎস জানা গেলে সেটা এলিয়েনের পৃথিবী সম্পর্কে জানার ক্ষেত্রে একটি বড় অগ্রগতি হবে। যেসব এফআরবি পুনরাবৃত্তি হয়েছে, সেসব খুবই মূল্যবান সংকেত। কারণ, এর মাধ্যমেই গবেষকেরা এর উৎস শনাক্ত করতে পারবেন। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এসব এফআরবির তীক্ষ্ণতার প্রাবল্য দেখে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এগুলো কোনো বিশাল উৎস থেকেই আসছে। হতে পারে এটা কৃষ্ণগহ্বরে পতিত কোনো নক্ষত্র থেকে আসছে। হতে পারে এলিয়েনদের পাঠানো কোনো বার্তাও।

/আরএইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close