দেশজুড়ে
এবার বাড়তে পারে বিদ্যুতের দামও!
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ দেশে উৎপাদিত বিদ্যুতের অর্ধেকের বেশি আসছে গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকে। চলতি মাস থেকে কার্যকর হওয়া গ্যাসের বর্ধিত মূল্যের কারণে জ্বালানি বাবদ এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যয় বেড়ে যাবে। এতে বাড়তে পারে বিদ্যুতের দামও। যদিও এখনই বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা দেখছে না বিদ্যুৎ বিভাগ।
বিতরণ কোম্পানিগুলোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ জুন সব ধরনের গ্রাহকের গ্যাসের দাম ৩২ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। ১ জুলাই থেকে নতুন এ মূল্যহার কার্যকর হয়েছে। নতুন মূল্যহার অনুযায়ী, বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরবরাহ করা গ্যাসের মূল্য ৪১ শতাংশ বাড়িয়ে প্রতি ঘনমিটারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ টাকা ৪৫ পয়সা, যা আগে ছিল ৩ টাকা ১৬ পয়সা।
গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিদ্যুতের দাম এখনই বাড়াতে হবে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস। তিনি বলেন, গ্যাসের অপ্রতুল সরবরাহের কারণে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হয়েছে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যয় বেড়ে যায়। তেলের পরিবর্তে এখন গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে গুরুত্ব দিচ্ছি। গ্যাসের দাম বাড়ায় গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ব্যয় বাড়লেও সামগ্রিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে ব্যয় হবে, তাতে এখনই বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না।
খাতসশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদ্যুৎ খাতের ঘাটতি মেটাতে হলেও মূল্য সমন্বয়ের প্রয়োজন হতে পারে। পাশাপাশি আগামীতে চাহিদা বাড়লে এবং সে অনুযায়ী গ্যাসের প্রাপ্যতা নিশ্চিত না হলে আবারো তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনেই যেতে হবে। সেক্ষেত্রে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির প্রভাবে সামগ্রিকভাবে বিদ্যুতের দাম আরো বাড়াতে হবে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, এমনিতেই ১০ হাজার কোটি টাকা ঘাটতিতে রয়েছে বিদ্যুৎ খাত। তেলভিত্তিক কেন্দ্র কমানো হচ্ছে না, যদিও এর ওপর নির্ভরশীলতা আগেই কমানো যেত। সুযোগ থাকলেও এসব কেন্দ্র বন্ধ না করে উল্টো বাড়ানো হয়েছে। অদূরভবিষ্যতেও তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র কমানো হবে কিনা এবং ঘাটতির মধ্যেই বিদ্যুতের দাম অপরিবর্তিত রাখা হবে কিনা তা দেখার বিষয়।
বিইআরসি চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম বলেন, গ্যাসের মূল্যহার বাড়ানো হলেও বিদ্যুৎ খাতে অতিরিক্ত ভর্তুকি প্রয়োজন হবে না বলে কমিশনের বিশ্লেষণে দেখা গেছে। তবে পরবর্তী সময়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে গ্যাসের বর্ধিত এ মূল্য কতখানি প্রভাব ফেলছে, তা যাচাই করে দেখতে পারে কোম্পানিগুলো। ব্যয় সমন্বয়ে প্রয়োজন হলে তারা প্রস্তাব দিতে পারে। প্রস্তাবের ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেবে কমিশন।