গার্মেন্টসপ্রধান শিরোনাম
এখনো বোনাস দেয়নি ৪৯৬ পোশাক কারখানা
২৭ জুলাই পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল সরকার
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বোনাস পরিশোধের জন্য গত ২৭ জুলাই পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল সরকার। কিন্তু বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি- বিজিএমইএ’র দেয়া তথ্য মতে, সংগঠনটির সদস্যভুক্ত এক হাজার ৮৭৪টি কারখানার মধ্যে ৭৪ শতাংশ কারখানা ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে বোনাস দিয়েছে। এখনও বোনাস দেয়নি ৪৯৬টি কারখানা; অর্থাৎ ২৬ শতাংশ কারখানায় এখনও বোনাস হয়নি।
এদিকে, বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন- বিকেএমইএ’র ১ হাজার ১০১টি কারখানার মধ্যে বোনাস পরিশোধ করেছে ১৩৪টি। আর এখনও বোনাস দেয়নি ৯৬৭টি কারখানা।
তবে ২৭জুলাই শিল্প পুলিশের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশের পোশাক খাতের (বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমএ) ৩ হাজার ৩৭২টি কারখানার মধ্যে ৬৬১টি কারখানায় বোনাস দেয়া হয়েছে। ২ হাজার ৭১১টি কারখানায় বোনাস দেয়া হয়নি। অর্থাৎ ১৯ দশমিক ৬০ শতাংশ কারখানায় বোনাস হয়েছে। ৮০ ভাগের বেশি কারখানায় এখনও বোনাস হয়নি।
বিজিএমইএ’দাবি করেছে, কারখানা থেকেই তারা তথ্য নিয়ে পরিসংখ্যান জানিয়েছে। তাদের দেয়া তথ্যে কোনো গরমিল নেই।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ এর সহ-সভাপতি আরশাদ জামাল দিপু বলেন, এরইমধ্যে ৯০ শতাংশ কারখানার মালিক শ্রমিকদের বোনাস দিয়েছেন। বৃহস্পতিবারের মধ্যে বাকিরাও দিয়ে দেবেন।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও মালিকরা শ্রমিকদের পাশে আছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, অনেকের হাতেই এই মুহূর্তে টাকা নেই। তারা ধারদেনা করে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দিয়েছেন।
এ বিষয়ে বিকেএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আমাদের সদস্যভুক্ত কতগুলো কারখানায় বোনাস হয়েছে এখনও তা বলা যাচ্ছে না। তবে কোনো কারখানায় বেতন-বোনাস নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়নি। আমরা মালিকদের বলেছি, শ্রমিক-মালিক সমতার ভিত্তিতে বেতন ও বোনাস পরিশোধ করতে। আমাদের পক্ষ থেকে কোনো মালিকে সময় বেঁধে দেয়া হয়নি।
তবে মালিকপক্ষের এ দাবিগুলোর সঙ্গে একমত নয় শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেডিমেড গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভানেত্রী লাভলী ইয়াসমিন বলেন, এখনো অনেক কারখানায় বোনাস তো দূরের কথা, বেতনও হয়নি। মালিকেরা চুক্তি ভঙ্গ করেছে। অনেকে আবার নামকাওয়াস্তে কিছু টাকা ধরে দিয়েছে বোনাসের নামে।
তিনি আরো বলেন, ঈদের একদিন আগে বেতন-বোনাস নিয়ে তারা চাইলেও বাড়ি যেতে পারবে না। মালিকপক্ষ কারসাজি করে এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
অঞ্চলভিত্তিক বিভাজনে দেখা যায়, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় ৩২২টি কারখানার মধ্যে বোনাস দিয়েছে ২৩৫টি কারখানা। গাজীপুরের ৭১৩টি কারখানার মধ্যে ৫২৫টি, সাভার-আশুলিয়া এলাকার ৪১২টির মধ্যে ৩৫৫টি, নারায়ণগঞ্জের ১৯৫টির মধ্যে ১৪৩টি কারখানা তাদের বোনাস পরিশোধ করেছে। চট্টগ্রাম অঞ্চলের ২৩২টি কারখানার মধ্যে এখনও বোনাস দিতে পারেনি ১১২টি কারখানা।
এর আগে গত ২০ জুলাই দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের সভা শেষে তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের ঈদুল আজহার বোনাস ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে পরিশোধ করার কথা জানান শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান। ওই দিনই জানানো হয়, চলতি মাসের অর্ধেক বেতন পরিশোধ করা হবে ৩০ জুলাই মধ্যে।
/এন এইচ