প্রধান শিরোনামশেয়ার বাজার
উত্থানের মাধ্যমে লেনদেন শুরু হলেও শেষ পর্যায়ে শেয়ারবাজারে বড় পতন
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার শেয়ারবাজারে মূল্য সূচকের বড় উত্থানের মাধ্যমে লেনদেন শুরু হলেও শেষ পর্যায়ে তা বড় পতনে রূপ নিয়েছে। লেনদেন শুরু হতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্য সূচক প্রায় একশ পয়েন্ট বেড়ে গিয়েছিল, তবে ভোজবাজির মতো বাজারের সেই চিত্র উল্টে লেনদেন শেষে সূচকটির পতন হয়েছে প্রায় একশ পয়েন্ট।
ঈদের আগের শেষ সপ্তাহ থেকেই একের পর এক বড় উত্থান হওয়া শেয়ারবাজারে সোমবার লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৮১ পয়েন্ট বেড়ে যায়, যা লেনদেনের ১০ মিনিটের মাথায় বেড়ে দাঁড়ায় ৯৩ পয়েন্ট।
মূল্য সূচকের এমন উল্লম্ফনের মাধ্যমে লেনদেন শুরু হলেও আধাঘণ্টার মধ্যে সূচক নিম্নমুখী হতে থাকে। বিনিয়োগকারীদের বিক্রির চাপে দরপতন হতে থাকে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের। লেনদেনের শেষ ঘণ্টায় রীতিমতো ধসে পড়ে মূল্য সূচক।
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৭৪ পয়েন্ট কমে চার হাজার ৭৮৫ পয়েন্টে নেমেছে। প্রধান সূচকের পাশাপাশি বড় পতন হয়েছে অপর দুই সূচকের। এর মধ্যে বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ২১ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৬১৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ১৩ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৯৬ পয়েন্টে নেমেছে।
এমন বড় পতনের বিষয়ে ডিএসইর এক সদস্য বলেন, সূচকের এমন বড় পতন হওয়াটাই স্বাভাবিক। কারণ কয়েক দিন ধরেই একের পর এক বড় উত্থান হচ্ছে। যখন একের পর এক বড় উত্থান হবে, তখন যে কোনো মুহূর্তে বড় পতন হবে এটাই নিয়ম।
তিনি বলেন, টানা উত্থানের কারণে অনেক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেশ বেড়ে গেছে। ওই সব প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নেয়ার জন্য বিক্রির চাপ বাড়ান। বড় ধরনের বিক্রির চাপ আসায় কিছুটা দরপতন হয়েছে। তবে আশার কথা সূচকের বড় পতন হলেও লেনদেন প্রায় দেড়শ হাজার কোটি টাকা হয়েছে। তার মানে বিনিয়োগকারীরা বর্তমান দামে শেয়ার কিনতে আগ্রহী এবং বাজার তারল্য সংকট কাটিয়ে উঠেছে।
এদিকে ম্যূল সূচকের বড় পতনের সঙ্গে দরপতনের খাতায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ১১৮ প্রতিষ্ঠানের দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ২২৮টির এবং ১০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অথচ লেনদেনের শুরুতে প্রায় তিনশ প্রতিষ্ঠানের দাম বেড়ে যায়। বিপরীতে দাম কমে ৫০টির।
ভোজবাজির মতো মূল্য সূচক উল্টে গেলেও এদিন ডিএসইতে লেনদেনের গতি বেড়েছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৪০৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় এক হাজার ৩৫১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের দিনের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৫৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
এর আগে গত ২৮ জুন ইউনিলিভার বহুজাতিক কোম্পানি গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন কেনায় ডিএসইতে দুই হাজার ৫৪৩ কোটি টাকার লেনদেন হয়। এর মধ্যে গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনেরই দুই হাজার ২২৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়। এ দিনের লেনদেন বাদ দিলে আজ ডিএসইতে ২০১৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বরের পর সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে।
বড় অঙ্কের এই লেনদেনের দিনে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার। কোম্পানিটির ৫৪ কোটি ৯০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্র্যাক ব্যাংকের ৪৬ কোটি ৭২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৪২ কোটি ৬৬ লাখ টাকার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো ফার্মা।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- আইএফআইসি ব্যাংক, বেক্সিমকো, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস এবং সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৮৩ পয়েন্ট। বাজারে লেনদেন হয়েছে ৩১ কোটি ৭২ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৯০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ১৭৪টির এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
/এন এইচ