বিনোদন
ঈদে নেই তারকারা, কেন?
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: ঈদ মানেই আনন্দ। আর আনন্দের জন্য প্রয়োজন বিশেষ বিনোদন। সেই বিনোদনের বড় কারিগর বিনোদন জগতের তারকারা। বিনোদনের সবচেয়ে বড় মাধ্যম সিনেমা। ঈদের সিনেমা নিয়ে দর্শকের মধ্যে বাড়তি আগ্রহ থাকে। কিন্তু যাঁরা বিনোদন দেবেন, সেই তারকাদের অনেক দিন ধরে ঈদের ছবিতে পর্দায় পাচ্ছেন না দর্শক। বিষয়টি নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত দিচ্ছেন চলচ্চিত্র–সংশ্লিষ্টরা। কেউ কেউ বলছেন, এখন সিনেমা নির্মাণ ঝুঁকি হয়ে গেছে। তা ছাড়া আছে হলসংকট। দেশে এখন যে পরিমাণ হল সচল আছে, তাতে ঈদে শাকিব খানের দুটি ছবি মুক্তি পেলেই আর অন্য তারকার ছবি চালানোর জায়গা থাকে না। আবার কেউ বলছেন, এখন তো তারকা একজনই। আর বাকিদের ছবি ঈদে মুক্তি দিয়ে লোকসানে পড়ার আশঙ্কা থেকে যায়।
প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু বলেন, ‘এখন তো শাকিব খানের ছবি ছাড়া অন্যদের ছবি সেভাবে চলছে না। তাই ঈদের মতো উৎসবে বড় বাজেটের ছবিতে অন্য তারকাদের নিয়ে ছবি নির্মাণ করলে প্রযোজকের লোকসানের ভয় থাকে। তা ছাড়া অন্য তারকাদের ছবি থাকলেও তো চালানোর জায়গা নেই। হল কোথায়?’
কয়েক বছর ধরেই আরিফিন শুভ, অপু বিশ্বাস, মাহিয়া মাহি, বিদ্যা সিনহা মিম, পরীমনি, সাইমন, বাপ্পী, আঁচল অভিনীত ছবি ঈদে নেই। কয়েক বছর ধরে ঈদের ছবি শাকিব-বুবলীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। ঈদের সময় যত বেশি তারকাসমৃদ্ধ ছবি থাকবে, দর্শকদের বিনোদনের আমেজ তত বেশি হবে বলে মনে করেন তারকারা।
সেই ২০১৫ সালে ১৮ জুলাই মুক্তি পায় মিম অভিনীত ‘পদ্মপাতার জল’ ছবিটি। সেটি মিমের সর্বশেষ অভিনীত দেশীয় ঈদের ছবি। এরপর আর তাঁর কোনো ছবি ঈদে মুক্তি পায়নি। একই অবস্থা আরেক অভিনেত্রী পরীমনিরও। তাঁর সবশেষ ঈদের ছবি ‘রক্ত’ মুক্তি পায় ২০১৬ সালে।
ঈদের সময় তারকাদের ছবি মুক্তি না পাওয়া প্রসঙ্গে বিদ্যা সিনহা মিম বলেন, ‘পেশাদার প্রযোজক কমে গেছে। যাঁরা নিয়মিত উৎসবকেন্দ্রিক ছবি নির্মাণ করতেন, এখন তাঁরা আর সিনেমাতে বিনিয়োগ করছেন না। নতুন প্রযোজকদের মধ্যে পেশাদারত্বের অভাব আছে। তাঁরা পরিকল্পনা করে ঈদের ছবি নির্মাণ করছেন না। বেশি বেশি ছবি নির্মাণ হলে বেশি বেশি তারকার ছবি পাওয়া যেত ঈদে।’
এই সাবেক লাক্স তারকা আরও বলেন, ‘হলসংকট আছে। বর্তমান সময়ে জনপ্রিয় তারকা শাকিব খান। এখন যে পরিমাণ হল খোলা আছে, ঈদের উৎসবে শাকিব খানের দু-তিনটি ছবি থাকলে অন্য তারকাদের ছবির প্রতি একটু আগ্রহ কমই থাকে হলমালিকদের।’
অরিফিন শুভ বললেন, ‘সব তারকারা চান ঈদের উৎসবে যেন তাঁর অন্তত একটা ছবি মুক্তি পায়। কারণ, এই সময় সব পেশার মানুষের ছুটি থাকে। ছুটিতে কিছু মানুষ সিনেমা দেখেন। কিন্তু ঈদ উৎসবে দর্শকের সঙ্গে থাকার সুযোগ পাচ্ছেন না অনেক তারকাই।’
এই অভিনেতা বলেন, ১৯ কোটি মানুষের দেশে মাত্র শ দুয়েক সিনেমা হল। ঈদ উৎসবে এই সংখ্যক হলে কয়টা সিনেমা মুক্তি দেওয়া সম্ভব? সুতরাং বাড়তি কথা বলে কোনো লাভ নেই। এখন একমাত্র সরকারই পারে এই শিল্পকে বাঁচতে, শিল্পীদের বাঁচাতে।