দেশজুড়ে

ইয়াবার চেয়ে ‘আইস’ এর ক্ষতি ৫০ গুণ বেশি

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ইয়াবার মতো মারণঘাতী মাদকের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি ও অভিযানের কারণে কৌশল পাল্টাচ্ছে মাদককারবারিরা। ইয়াবার বিকল্প হিসাবে নতুন মাদকের বাজার তৈরির অপচেষ্টাও থেমে নেই। মাদকসেবীরাও ঝুঁকছে নতুন মাদকে। ইয়াবার বিকল্প হিসাবে বাজারে খাত বা এনপিএসর পর আবির্ভাব ঘটেছে আইস বা ক্রিস্টাল মেথ নামক নতুন মাদকের।

এ মাদক নিয়ে তটস্থ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারির মধ্যেই চলতি বছরের ২৭ ফেব্রম্নয়ারি নতুন মাদক হিসেবে আবির্ভূত হয় ক্রিস্টাল মেথ বা আইস। এরপরই নড়েচড়ে বসে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘আইস’ লবণের মতো দানাদারজাতীয় মাদক। দেখতে কখনো চিনির মতো কখনো মিসরির মতো। আইস উচ্চমাত্রার মাদক, যা সেবনের পর মানবদেহে উত্তেজনার সৃষ্টি করে। আইসের দাম ইয়াবার চেয়ে অনেক বেশি। আবার ক্ষতি বা প্রভাবও বেশি। এটি সেবনে মস্তিষ্ক বিকৃতিতে মৃতু্য হতে পারে। তাছাড়া অনিদ্রা, অতিরিক্ত উত্তেজনা, স্মৃতিভ্রম, হৃদরোগকে বেগবান করে। এই মাদক সয়লাব হলে ইয়াবার চেয়ে বেশি বিপর্যয়ের মুখে পড়বে তরুণ সমাজ।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৭ ফেব্রম্নয়ারি জিগাতলার ৭/এ নম্বর সড়কের ৬২ নম্বর বাসায় আইস ও এমডিএমএ নামের নতুন মাদকের সন্ধান পায় তারা। অভিযানে ওই ভবনের বেজমেন্টে মাদক তৈরির অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরির সন্ধানও মেলে। ওই ল্যাব থেকে ৫ গ্রাম আইসসহ জাহাঙ্গীর আলম (৫৯) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আইস নামে ওই মাদক সরবরাহের মূলহোতা হাসিব মোয়াম্মার রশিদকেও (৩২) গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ঘটনায় ধানমন্ডি থানায় মামলা হয়।

মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক কামরুজ্জামান বলেন, আইস মূলত চায়না, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, কম্বোডিয়ায় প্রচলিত। গ্রেপ্তার হাসিব মালয়েশিয়ায় পড়াশোনার সময়ই আইস সম্পর্কে অবগত হয়। সেখানেই কেমিক্যালের মাধ্যমে আইস তৈরির কৌশল রপ্ত করেন।

কামরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশি এক নাগরিক এই নতুন মাদক আমদানিতে জড়িত বলে তথ্য মেলে। তার নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেলেও পলাতক থাকায় গ্রেপ্তার করা যায়নি তাকে।

এ ব্যাপারে মাদক বিশেষজ্ঞ সাবেক সচিব ভূঁইয়া শফিকুল ইসলাম বলেন, একবার আইস সেবন শুরু করলে আর রিকভার করা যায় না। আইসের ক্ষতি ইয়াবার চেয়ে ৫০ গুণ বেশি। তা ছাড়া এর দামও বেশি। যে কারণে একবার এর সেবন শুরু হলে ওই আইসসেবী যেকোনো অপরাধ কর্মের মাধ্যমে টাকা জোগানের চেষ্টা করবে। ইতোমধ্যে একটা সীমিত ক্রেতা শ্রেণিও তৈরি হয়েছে। এই মাদকের ভয়াবহতা বেশি, মৃতু্য ঝুঁকি ইয়াবার চেয়েও বেশি।

কঠোরভাবে মাদকবিরোধী আইন অনুসরণ করে অভিযান পরিচালনা করতে হবে। সময় থাকতে আইসের সব পথ বন্ধ করতে হবে। প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে বলে জানান তিনি।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close