আশুলিয়াপ্রধান শিরোনামস্থানীয় সংবাদ

ইমোতে পরিচয়, আশুলিয়ায় দাওয়াত দিয়ে মুক্তিপণ আদায়

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ভুক্তভোগীর এসএমএসের মাধ্যমে অভিযোগ পেয়ে সাভারের আশুলিয়ায় অভিযান চালিয়ে নারীসহ ৪ প্রতারককে আটক করেছে পুলিশ। আটকরা নারীর মাধ্যমে মোবাইলে বন্ধুত্বের ফাঁদ পেতে বাসায় ডেকে নিয়ে জিম্মি করার পর মারধর করে মুক্তিপণ আদায় করতো।

শুক্রবার (৫ জুন) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক ইকবাল হোসেন। এর আগে রাত ১০টার দিকে আশুলিয়ার নয়ারহাট ও বাইপাইল, কোহিনুর গেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

আটকরা হলেন- টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী থানার সিলিমপুর গ্রামের হাসি আক্তার (২৮), নাটোর জেলার নলডাঙ্গা থানার তোপাপুকুর গ্রামের মৃত ইউনুস আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম (৩৫), পাবনা জেলার সুজানগর থানার পয়রান গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে হৃদয় (১৮) ও টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর থানার পাইসানা উত্তর পাড়া গ্রামের বাবি কাদের খানের ছেলে ফিরোজ আল মামুন (২৭)। এঘটনায় ভুক্তভোগীর অনুরোধে তার নাম পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, মোবাইলে বন্ধুত্ব করে বাসায় ডেকে এনে মারপিট করে দেড় লক্ষ টাকা আদায়ের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট ভিকটিম মোবাইল ফোনের মেসেজের মাধ্যমে অভিযোগ পাঠান। ভুক্তভোগীর সাথে মোবাইলের ইমো অ্যাপের মাধ্যমে বন্ধুত্ব করে প্রতারকরা। পরে বাসায় কৌশলে ডেকে নিয়ে মারধর করে ভুক্তভোগী ওই যুবকের কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা ও মোবাইল ফোনসহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র রেখে দেয়। সম্মানের দিকে তাকিয়ে কাউকে কিছু না বলে সেখান থেকে চলে আসে ভুক্তভোগী। এর কয়েক দিন পর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে মেসেজ দেয় ওই যুবক।

পুলিশ আরও জানায়, প্রত্যেকের আশে পাশে কারা বসবাস করেন, কিভাবে বসবাস করেন, কে কি করছেন সেই বিষয়ে সবার নজর রাখা উচিত । আশেপাশের কোথাও কোন অপরাধ সংগঠিত হলে তাৎক্ষনিকভাবে আইন শৃংখলা বাহিনীকে জানানো উচিত। প্রয়োজনে আপনার পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন রাখা হবে।

মেসেজে ভুক্তভোগী যুবক লেখেন, “স্যার, কিছুদিন আগে আমার সাথে একটা মেয়ের (মূলত মহিলা) ইমোতে তে পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে আত্মীয়ের মত ব্যবহার করতে থাকে। আমাকে দাওয়াত দেয়। আমি রোজা তাই যেতে চাইনি, পরে আমাকে ইফতারির জন্য দাওয়াত দেয়। আমি গেলে পরে আমাকে এই মহিলা আর ৪ জন ছেলে একটা রুমে প্রচন্ড মার ধোর করে। পরে আমার মুক্তিপন দেড় লক্ষ টাকা বিকাশ দিয়ে নিয়ে নেয়। ছাড়ার আগে আমি যেন কোন স্টেপ নিতে না পারি তাই আমাকে দিয়ে একটা সাদা স্ট্যাম্প পেপারে সাইন নেয় এবং আমার সামনে কনডমের পেকেট রেখে কয়েকটি ছবি তুলে রাখে। ওই মহিলার ছবি আর ৪ জন ছেলের ১ জনের ছবি আছে আমার কাছে। দয়া করে আমার ব্যাপার টা একটু গোপন রাখবেন হয়তো তারা জানলে আমার ক্ষতি করবে। স্যার আমি খুব ভয়ের সাথে অভিযোগ করছি। আমার সাথে থাকা মোবাইল J5(2016), ব্যাগ এর ভিতরে মূল্যবান কিছু জিনিস ওরা রেখে দেয়।

বি:দ্র: আমি জানি এখানে আমি বাসায় গিয়ে অপরাধ করেছি। সেজন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। কীভাবে কী হয়ে গেল আমি এখনো ভাবতে পারছিনা। আমাকে ক্ষমা করবেন।”

আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক এসআই ইকবাল হোসেন জানান, সেই মেসেজের মাধ্যমে পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথমে আশুলিয়ার নয়ারহাট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে শফিকুলকে আটক করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে অভিযুক্ত নারী হাসিকে আটক করা হয়। তাদের সাথে নিয়ে বাইপাইলের কোহিনুর গেটে অভিযান চালিয়ে হৃদয় ও ফিরোজ আল মামুনকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে মুক্তিপণের ৬০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এঘটনায় আরও দুইজন পলাতক রয়েছেন।

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close