খেলাধুলাদেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
ইতিহাস গড়ে জিতল বাংলাদেশ
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: লক্ষ্য বিশাল, ৩২২ রান। এই বিশাল লক্ষ্য তাড়া করেও যে জেতা সম্ভব সেটা প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ। টনটনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সাত উইকেটে জিতেছে লাল-সবুজের দল। এই জয়ে ইতিহাস গড়েছে মাশরাফিরা। ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জিতেছে তারা।
অবশ্য ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডেটি ছিল বিশ্বকাপেই। গত বিশ্বকাপে নেলসনে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৩১৮ রান তাড়া করে জিতেছিল। এবার সেই রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ।
এই জয়ের সুবাদে শেষ চারে খেলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল করেছে বাংলাদেশ। পাঁচ ম্যাচে পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে তারা। তারা দুটি ম্যাচ জিতে, একটিতে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছে। আর দুটি ম্যাচ হেরেছে। সমান ম্যাচে আট পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে অস্ট্রেলিয়া।
আজ সোমবার টনটনের ছোট মাঠে এই বিশাল লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছেন দুই বাংলাদেশি ওপেনার। সৌম্য সরকার ২৯, তামিম ইকবাল ৪৮ রান করে সাজঘরে ফেরেন। অবশ্য মুশফিকুর রহিম মাত্র এক রান করে আউট হলেও চতুর্থ উইকেট জুটিতে সাকিব ও লিটন দাস অসাধারণ দৃঢ়তা দেখিয়ে দলকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেন।
সাকিব ব্শ্বিকাপে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করেন। ৯৯ বলে ১২৪ রান করেন তিনি। এটি তাঁর নবম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। ১৬টি চারের মার দিয়ে ইনিংসটাকে সাজিয়েছেন তিনি।
তবে বিশ্বকাপ অভিষেকে দারুণ উজ্জ্বলতা ছড়িয়েছেন লিটন দাস। খেলেছেন ৬৯ বলে ৯৪ রানের দারুণ একটি ইনিংস। যাতে আটটি চার চারটি ছক্কার মার তাঁর এই ইনিংসে।
এর আগে নির্ধারিত ৫০ ওভারে আট উইকেটে ৩২১ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে খেলার আশা টিকিয়ে রাখতে ম্যাচটা জিততে হবে মাশরাফিদের। আর তার জন্য চাই ৩২২ রান।
বিশ্বকাপে গত আসরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৩১৮ রান করে স্কটল্যান্ড। ওই ম্যাচে ছয় উইকেটে জয় পায় বাংলাদেশ। চার উইকেটে ৩২২ করেন তামিমরা। জিততে হলে ওই রেকর্ড ভাঙতে হবে মাশরাফিদের।
শেই হোপ, লুইস আর হেটমেয়ার যেভাবে ব্যাট করছিলেন মনে হচ্ছিল ৩৫০ পার হয়ে যাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান। সেটা হলো না সাকিব, মুস্তাফিজ আর সাইফুদ্দিনের কারণে। নিয়মিত উইকেট নিয়ে ওই তিনজনই রানের লাগামটা টেনে ধরেন। মুস্তাফিজ আর সাইফুদ্দিন পেয়েছেন তিনটি করে উইকেট। সাকিব পেয়েছেন দুই উইকেট।
বাংলাদেশ সব সময় প্রিয় প্রতিপক্ষ শেই হোপের। আজও বাংলাদেশের বিপক্ষে হেসেছে হোপের ব্যাট। তবে শতক পুরো করতে পারেননি। ১২১ বলে ৯৬ করে আউট হন তিনি। হোপকে ফেরান মুস্তাফিজ। শেই হোপের সঙ্গে জুটি গড়লেন হেটমেয়ার। আর ঝড় তুললেন একটা। ২৬ বলে করে ফেললেন ৫০। ৪০তম ওভারে মুস্তাফিজ ফেরালেন হেটমেয়ারকে। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা হেটমেয়ার আউট হওয়ার পর নামলেন আন্দ্রে রাসেল। মুস্তাফিজের বলটা রাসেলের ব্যাট ছুঁয়ে মুশফিকের হাতে! তিন উইকেটে ২৪২ রান থেকে তা হয়ে গেল পাঁচ উইকেটে ২৪৩!
প্রথম ওভারটা মাশরাফি করলেন। বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইল বলই ধরলেন না। এক রানও দিলেন না অধিনায়ক। গেইলকে শুরু থেকেই মনে হচ্ছিল অপ্রস্তুত। আর সেই সুযোগটাই নিলেন সাইফউদ্দিন। নিজের দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলটা গেইলের ব্যাট ছুঁয়ে গেল মুশফিকের গ্লাভসে।
শূন্য রানে বিদায় নেন গেইল। খেলেছেন ১৩ বল। টনটনে টস জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছেন মাশরাফি। একটু দেরি করেই বোলিংয়ে এসেছেন সাকিব আল হাসান। এসেই ভেঙেছেন লুইস আর হোপের জুটি। লুইসকে ৭০ রানে ফেরান তিনি। পরে পোরানকেও আউট করেন তিনি। ৩০ বলে ২৫ রানে আউট হন তিনি।
মাশরাফি আট ওভারে ৩৭ রান দিয়েছেন; তবে কোনো উইকেট পাননি। সাইফুদ্দিন ১০ ওভারে ৭২ রান দিয়ে তিন উইকেট নিয়েছেন। মুস্তাফিজ নয় ওভারে ৫৯ দিয়ে তিন উইকেট নেন। সাকিব আট ওভারে ৫৪ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন।