আমদানি-রপ্তানীপ্রধান শিরোনামবিশ্বজুড়েশিল্প-বানিজ্য

ইউক্রেন যুদ্ধ;টালমাটাল বিশ্ব অর্থনীতি

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: ইউক্রেন যুদ্ধের অজুহাতে রাশিয়ার ওপর কঠোর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করেছে পশ্চিমা বিশ্ব। এতে টালমাটাল পুরো বিশ্ব অর্থনীতি। বিশ্ববাজারে বেড়ে গেছে জ্বালানি, খাদ্যসহ সব ধরনের পণ্যের দাম। এখন চীনের বিরুদ্ধেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে ওয়াশিংটন। খবর রয়টার্সের।

সব ধরনের যন্ত্রাংশের পাশাপাশি বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ কৃষিপণ্য রফতানিকারক দেশ চীন। নিষেধাজ্ঞা ও অবরোধ দিয়ে দুদেশকে একঘরে করতে পারলে এক তরফা ফায়দা লুটবে মার্কিন কোম্পানিগুলো। এতে পুরো বিশ্বেই দেখা দেবে হাহাকার আর অর্থনীতিতে নামবে ধস।

ইউক্রেন যুদ্ধের অজুহাতে রাশিয়াকে বিশ্ব থেকে একঘরে করার পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমাবিশ্ব। এ লক্ষ্যে মস্কোর বিরুদ্ধে এ যাবতকালের সবচেয়ে কঠোর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করেছে। যার প্রভাবে টালমাটাল পুরো বিশ্বের অর্থনীতি। বিশ্ববাজারে বেড়ে গেছে তেল, গ্যাস, খাদ্যসহ প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম। যার মাশুল দিতে হচ্ছে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষকে।

রাশিয়াকে কোনঠাসা করার এ প্রচেষ্টার মধ্যেই আবার চীনের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক নীতি গ্রহণ করেছে ওয়াশিংটন। মস্কোর ওপর আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা না মানার অভিযোগ আনা হয়েছে চীনের বিরুদ্ধে। নিষেধাজ্ঞা না মানলে বেইজিংকে একই পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ওয়াশিংটন।

বিশ্বের শীর্ষ তেল ও গ্যাস রফতানিকারক দেশ রাশিয়া। প্রতিদিন ৮০ লাখ ব্যারেল তেল বিশ্ববাজারে রফতানি করে মস্কো। যার ৬০ শতাংশ যায় ইউরোপে। তেল ছাড়াও বিশ্বের শীর্ষ গ্যাস রফতানিকারক মস্কো। ইউরোপীয় ইউনিয়নের মোট গ্যাসের আমদানির ৪৫ শতাংশই রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল। জ্বালানির পাশাপাশি রাশিয়া বিশ্বের বৃহত্তম গম রফতানিকারক দেশও। রাশিয়া একাই বিশ্বের গম রপ্তানির ১৮ শতাংশ করে।

নিষেধাজ্ঞা ও অবরোধ দিয়ে চীন ও রাশিয়াকে একঘরে করতে পারলে পুরো বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের একাধিপত্য তৈরি হবে। শীর্ষ জ্বালানি, খাদ্য ও যন্ত্রাংশ উৎপাদক রাশিয়া ও চীনকে বিশ্ব বাজার থেকে দূরে রাখতে পারলে এ সব পণ্যের দাম বেড়ে যাবে বহুগুণ। যার ফায়দা নেবে মার্কিন কোম্পানিগুলো। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এ পরিকল্পনার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বিশ্ববাজারে।

রাশিয়ার ওপর অবরোধ দেয়ায় জ্বালানির পাশাপাশি বিশ্বে বেড়ে গেছে গমসহ সব ধরনের খাদ্য পণ্যের দাম। ইতোমধ্যে আফ্রিকার দেশগুলোতে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। সময় মতো খাদ্য আমদানি না করতে পারলে দেশগুলোতে শিগগিরই দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতির হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিশ্বখাদ্য সংস্থা ও জাতিসংঘ।

পাশাপাশি ভোগান্তির বাইরে নয় ইউরোপের জনগণও। দেখা দিয়েছে মুদ্রাস্ফীতি ও অর্থনৈতিক সংকট। রাশিয়ার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক জ্বালানি নিষেধাজ্ঞা দিলে ইউরোপে অর্থনৈতিক মন্দা তৈরি হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন ইউরোপীয় বিশেষজ্ঞরা।

পশ্চিমা বিশ্বের রাশিয়ার ওপর একের পর এক অবরোধেই টালমাটাল বিশ্ব অর্থনীতি। এরপর চীনের সঙ্গে সংঘাত শুরু হলে বিপর্যয় চরমে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।
/একে

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close