দেশজুড়ে
আ.লীগ নেতার নামে ফেসবুকে কটুক্তি করায় গ্রেফতার ২
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল পিপি ও ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক চন্দন সাহা সম্পর্কে কটুক্তির অভিযোগে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে শহরের গোপালবাড়ি এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- কথিত যোগগুরু ব্রহ্মচারি শান্তানন্দ ও তার শিষ্য গান-কবিতার দলের সদস্য এনামুল হোসেন।
শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল-মামুন ব্রহ্মচারি শান্তানন্দ ও এনামুল হোসেনকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক চন্দন সাহা তাদের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে সদর থানায় একটি মামলা করেছেন। সেই মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ব্রহ্মচারি শান্তানন্দকে নিয়ে শেরপুর হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি রয়েছে। তার বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অভিযোগও রয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের পুরোহিতরা তার কার্যকলাপের বিরোধিতা করে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীর কাছে অভিযোগও করেছিলেন। একপর্যায়ে তিনি প্রশাসনের নির্দেশে শেরপুর ত্যাগ করেন।
ব্রহ্মচারি শান্তানন্দ চট্টগ্রামের পটিয়া এলাকার বাসিন্দা। তার ভালো নাম প্রবীর চৌধুরী হলেও তিনি শান্তানন্দ নামে নিজেকে ব্রহ্মচারি দাবি করে ২০১৫ সালে শেরপুর শহরের রঘুনাথ বাজার এলাকার বিপি প্লাজার বিদ্যুৎ দামের বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে সেখানে ‘শিব শক্তি মিশন’ নাম দিয়ে আশ্রম গড়ে তুলে নানা ধরনের কার্যক্রম শুরু করেন।
এ সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের পুরোহিতরা তার বিরুদ্ধে বিতর্কিত কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে বিরোধিতা করতে থাকেন এবং জেলা প্রশাসন ও পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। একপর্যায়ে ব্রহ্মচারি শান্তানন্দ প্রশাসনের নির্দেশে শেরপুর ত্যাগ করেন। কিন্তু কয়েক মাস পর তিনি বিপি প্লাজায় এসে ফের নানা রকমের কর্মকাণ্ড শুরু করলে তার বিরুদ্ধে বিপি প্লাজার মালিক বাড়ির তৃতীয় তলা দখলের চেষ্টার অভিযোগ তুলে শান্তানন্দকে বাড়ি থেকে বের করে দেন।
এ ঘটনার পর শান্তানন্দ প্রথমে নিউমার্কেট এলাকার অনিল কবিরাজের বাড়িতে অবস্থান নেন। পরে সেখান থেকেও বিতাড়িত হয়ে ২০১৬ সালে নয়আনী বাজার এলাকার পোদ্দার কমপ্লেক্সের চতুর্থতলার ছাদে আশ্রয় নেন। সে সময় সেখানে ‘ক্রিয়াযোগ উপাসনালয়’ স্থাপন করে নানা বিতর্কিত কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
ওই সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের পুরোহিতরা তার বিরোধিতা করলে তিনি বক্তব্য-বিবৃতি এবং ফেসবুকে ব্রাহ্মণ ও ধর্ম নিয়ে বিভিন্ন বিতর্কিত স্ট্যাটাস দেয়া শুরু করেন। এসব ঘিরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এমনকি বাড়ীর মালিক দিলীপ পোদ্দার উপসনালয়টি সরিয়ে নেয়ার কথা বললে শান্তানন্দ ও তার ভক্তরা ক্ষুব্ধ হন।
এ নিয়ে পোদ্দার পরিবার ও শান্তানন্দ ভক্তদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাত শুরু হলে মামলা-মোকদ্দমা-আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এর জের ধরে ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর শনিবার শান্তানন্দ ব্রহ্মচারি এবং তার দুই শিষ্যকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে তারা আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হন। তারপর থেকে ব্রহ্মচারি শান্তানন্দ শেরপুর ত্যাগ করলেও মামলার হাজিরা দিতে তিনি ধার্য তারিখে শেরপুর আসেন।