দেশজুড়ে

আয় নেই, তবু কোটিপতি

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: তাঁর আয়ের কোনো উৎস নেই। নেই চাকরি কিংবা ব্যবসা। এরপরও তিনি কোটিপতি। তাঁর নাম রোকসানা খান। এরপরও তিনি আলাদিনের চেরাগ পান তাঁর প্রয়াত স্বামীর মাধ্যমে। স্বামী মো. হাবিবুর রহমান খান চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক চিফ হাইড্রোগ্রাফার। সাড়ে ১১ বছর তদন্ত শেষে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, স্বামীর উপার্জিত অবৈধ টাকায় ফ্ল্যাট, গাড়ি, জমি ও নগদ টাকার মালিক হন রোকসানা।

নগরের ডবলমুরিং থানায় করা দুদকের মামলায় গত বুধবার আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। এতে রোকসানা খানকে আসামি করা হয়। মারা যাওয়ায় মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় বন্দরের সাবেক কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান খানকে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক হুমায়ুন কবীর প্রথম আলোকে বলেন, তদন্তে টিউশনি, ডিশ ব্যবসা ও বুটিকের দোকান থেকে আয়ের কথা বললেও দালিলিক কিছুই দেখাতে পারেননি রোকসানা খান। স্বামী হাবিবুর রহমানের মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ আয়ের মাধ্যমে তিনি ১ কোটি ৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকার ফ্ল্যাট, গাড়িসহ বিভিন্ন সম্পদের মালিক হন।

২০০৮ সালের ২৯ জানুয়ারি দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে নগরের ডবলমুরিং থানায় দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় হাবিবুর রহমান খান ও তাঁর স্ত্রী রোকসানা খানকে আসামি করা হয়। এরপর দুজনে গ্রেপ্তার হন। পরে তাঁরা জামিনে মুক্তি পান। মামলা হওয়ার পর উচ্চ আদালত থেকে আসামিরা স্থগিতাদেশ নেন। ২০১৩ সালে এটি প্রত্যাহার হলে মামলার কার্যক্রম শুরু হয়। ওই বছরের ৯ মে মারা যান হাবিবুর রহমান। দুদকের মোট তিনজন কর্মকর্তা মামলাটি তদন্ত করেন।

দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, রোকসানা তাঁর নামে ঢাকায় চার কাঠা জমি, ৬৪ লাখ টাকা মূলে৵র ১ হাজার ৪৫৫ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট এবং ২ হাজার ২০০ বর্গফুটের ঢাকায় আরেকটি ফ্ল্যাট, আট বছর মেয়াদি সাড়ে সাত লাখ টাকার প্রতিরক্ষা সঞ্চয়পত্র, নয় লাখ টাকা দামের সঞ্চয়পত্র, ১৩ লাখ টাকা দামের একটি ব্যক্তিগত গাড়ি, ৬ লাখ ৮৭ হাজার নগদ টাকা ও অন্যান্য জায়গায় বিনিয়োগ করা ৩ লাখ ৫৬ হাজার টাকা সন্ধান পাওয়া যায়।

এগুলো যাতে হস্তান্তর করা না যায় আদালতের নির্দেশে জব্দ রাখা হয়েছে। তদন্তে রোকসানার নামে থাকা ৬৪ লাখ ৪০ হাজার টাকার স্থাবর ও ৩৯ লাখ ৯৩ হাজার অস্থাবর সম্পত্তিসহ মোট ১ কোটি ৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকার সম্পদ পাওয়া যায়।

আদালতে কর্মরত দুদক কর্মকর্তা এমরান হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগপত্রটি গ্রহণের শুনানির জন্য এখনো তারিখ নির্ধারণ হয়নি।

এই মামলায় জামিনে থাকা রোকসানা খানের মুঠোফোনে চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
/একে

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close