প্রধান শিরোনামবিশেষ প্রতিবেদন
আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ঋণের সুরাহা হলে ফেব্রুয়ারিতে কাজ শুরু
রিফাত মেহেদী, বিশেষ প্রতিনিধি: ঢাকা শহরের উত্তরাঞ্চল তথা সাভার, আশুলিয়া, নবীনগর ও ইপিজেড সংলগ্ন শিল্প এলাকার যানজট নিরসন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্রুত উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০১৭ সালে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়। তবে প্রকল্পের ৩ বছর পার হলেও ঋণ জটিলতায় শুরু হয়নি কাজ।
দেশের উত্তর- পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২০ টি এবং দক্ষিন- পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ৫/৬ টি জেলার মানুষ আশুলিয়া-নবিনগর-বাইপাইল হয়ে সহজে এবং দ্রুততার সাথে ঢাকায় প্রবেশ করতে পারবে।সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ টি জেলার প্রায় চার কোটি মানুষ এই প্রকল্প বাস্তবায়নে লাভবান হবে।
চীনা ব্যাংকের সাথে ঋণের সুরাহা না হওয়ায় কাজ আটকে আছে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক শাহাবুদ্দিন খান। তবুও সব জটিলতা সেরে আগামী ফেব্রুয়ারীতে শুরু হবে এই এক্সপ্রেসওয়ের কাজ। সেক্ষেত্রে সময়সীমা ও ব্যয় বাড়বে দুই-ই।
ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি সাভার, আশুলিয়া, নবীনগর ও ইপিজেড সংলগ্ন এলাকার যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে যা উক্ত এলাকায় শিল্প বিকাশে আরো সহায়ক হবে।
ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি নির্মাণাধীন ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এর সাথে সংযুক্ত হবে ফলে সাভার, ইপিজেড সংলগ্ন শিল্পাঞ্চল, ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ের সাথে সরাসরি সংযুক্ত হবে এতে রপ্তানীযোগ্য পণ্য পরিবহন উল্লেখযোগ্যভাবে দ্রুততর হবে।
২৪ কিমি এক্সপ্রেসওয়ের উভয় পাশে চারলেনের ১৪ দশমিক ২৮ কিলোমিটার সংযোগ সড়কও নির্মিত হবে। প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী আশুলিয়া অংশের যানজট নিরসন করা। সফলভাবে উড়াল সড়কটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকার সঙ্গে ৩০টি জেলার সহজ সংযোগ স্থাপিত হবে। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থাও হবে যানজটমুক্ত।
উন্নত ও দ্রুততর যোগাযোগ ব্যবস্থা সাভার শিল্পাঞ্চলে নতুন নতুন বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে ফলে প্রচুর নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। স্থানীয় জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার প্রভূত উন্নয়ন সাধিত হবে।
ঋণ আটকে থাকলেও আশাব্যঞ্জক ভাবে এগিয়েছে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রায় ১৬৫ একর জমি দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত ১৩টি সংস্থা। এর ফলে এই প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণে যে জটিলতা চলছিল সেটি কেটে গিয়েছে। এটি একটি তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি বলে মনে করছে সেতু কর্তৃপক্ষ।
সূত্রগুলো জানায়, সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মধ্যে রেলওয়ে ১৭ দশমিক ৯ একর, সওজ ৮০ দশমিক ২ একর, পানি উন্নয়ন বোর্ড ৪৯ দশমিক ৬ একর, সিভিল এভিয়েশন ৯ দশমিক ৪ একর, থানা কাউন্সিল, সাভার ০ দশমিক ৫৯ একর, রাজউক ৫ একর, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ০ দশমিক ১২ একর, টিসিবি ০ দশমিক ৪৩ একর, সোনালী ব্যাংক ০ দশমিক ০৯ একর, সিআইডি ০ দশমিক ২ একর, কৃষি ব্যাংক ০ দশমিক ২৫ একর, বিডিবিএল ০ দশমিক ৬২ একর এবং গণপূর্ত অধিদফতর ০ দশমিক ০১ একর জমি দিতে সম্মত হয়েছে।
জানা গেছে, গত ৪ সেপ্টেম্বর সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে একটি সভা হয়। ওই সভায় অ্যালাইনমেন্টভুক্ত জমি প্রকল্পের কাজে ব্যবহারের জন্য সেতু কর্তৃপক্ষের বরাবর বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য দাতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত হয়। প্রকল্পটি জনগুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এর আগে জমি দাতা সংস্থাগুলো সেতু কর্তৃপক্ষ বরাবর তাদের জমি বুঝিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দেয়।
২০২২ এ নির্মাণকাজ সমাপ্তির কথা থাকলেও মেয়াদের অর্ধেকেরও বেশি সময় পার হলেও শুরু হয়নি নির্মাণকাজ। ১৬১০৯ কোটি টাকারও বেশি বাজেটের এই প্রকল্প এখন আটকে আছে। এর মধ্যে চীনের এক্সিম ব্যাংক ঋণ দেবে ১০ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা।
জেড/আরএম