আশুলিয়াপ্রধান শিরোনামস্থানীয় সংবাদ
আশুলিয়ায় শিক্ষকের হাতে শিক্ষক খুন, একমাস পর খন্ডিত দেহ উদ্ধার
নিজস্ব প্রতিবেদক: আশুলিয়ায় মিন্টু চন্দ্র বর্মন নামে নিখোঁজ এক কলেজ অধ্যক্ষের খন্ডিত মরদেহ উদ্ধার করেছে র্যাব। এ ঘটনায় হত্যাকারী মূলহোতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের তথ্যে সেই কলেজের আঙ্গিনা থেকে মাটি খুড়ে হত্যাকান্ডের শিকার অধ্যক্ষের খন্ডিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সোমবার সাড়ে ১১ টার দিকে আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকায় বেসরকারি সাভার রেসিরডনশিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের ভিতরে অভিযান চালিয়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত মিন্টু চন্দ্র বর্মন লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের বাড়াইপাড়া গ্রামের শরত বর্মনের ছেলে।গ্রেফতার ৩ জন হলো- রবিউল ইসলাম, মোতালেব ও বাদশা। সম্পর্কে রবিউলের ভাগিনা বাদশা।
র্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কমান্ডার লে. কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান বলেন, গত ২২ জুলাই আশুলিয়া থানায় ওই শিক্ষক নিখোঁজের জিডি করেন তার পরিবার। ওই ঘটনায় র্যাব পুলিশের পাশাপাশি তদন্ত শুরু করে। নিখোঁজ ওই শিক্ষকের খন্ডিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যাকারী মূলহোতাসহ তিনজন গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
র্যাব বলছে, মিন্টু বর্মণকে হত্যার পর লাশ ছয় টুকরা করে স্কুলের মাঠে পুঁতে ফেলা হয়। দেহ থেকে মিন্টুর মাথা বিচ্ছিন্ন করে আশকোনার একটি ডোবায় ফেলা দেওয়া হয়।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখা থেকে আজ সোমবার সকালে এক খুদে বার্তায় সাংবাদিকদের অভিযান চালানোর তথ্য জানানো হয়। র্যাব জানিয়েছে, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়ায় রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকায় মিন্টু বর্মণের লাশ উদ্ধারে অভিযান শুরু করেছে।
মিন্টু চন্দ্র বর্মণ সাত বছর ধরে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় বসবাস করতেন। তিনি সেখানকার আমিন মডেল টাউন স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষকতা করতেন। দুই বছর আগে (২০১৯ সাল) মিন্টু চন্দ্র বর্মণসহ চারজন মিলে জামগড়া এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে সাভার রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়েন। অন্য তিন সহপ্রতিষ্ঠাতা হলেন রবিউল ইসলাম ও মোতালেব। ও রহিম বাদশা।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, র্যাব সদর দফতরের মিডিয়া উইং এর কমান্ডার খন্দকার মঈন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রথমে ৭ জুলাই মিন্টুকে হত্যার পরিকল্পনা করে গ্রেফতার ৩ জন। পরে ১৩ জুলাই স্কুলটিতে কোচিং পরবর্তী সময়ে ১০৬ নম্বরে তাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে হত্যাকান্ড ঘটানো হয়। মিন্টু বর্মণের সুনাম ও খুব ভাল শিক্ষক হওয়ায় পেশাগত হিংসা শুরু করেন গ্রেফতাররা। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ নিয়েও তাদের মধ্যে মনমালিন্য ছিল। এরই জের ধরে মিন্টু চন্দ্র বর্মণকে প্রথমে বাদশা হাতুড়ি দিয়ে মিন্টুর মাথায় আঘাত করে। পরে রবিউল ও বাদশা মিলে তাকে হত্যা করে স্কুলটির ১০৬ নম্বর কক্ষে ৬ টুকরো করে। এর পর মাথা রাজধানীর আশকোনার একটি ডোবায় ফেলে দেয়। পাশাপাশি ৫ টুকরো স্কুলের আঙ্গিনায় পুতে রাখে। এর পর থেকে রবিউল পলাতক ছিল। গত মধ্যরাতে রবিউলকে আব্দুল্লাপুর থেকে, তার ভাগিনা বাদশাকে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থেকে আর মোতালেব কে আশকোনা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে রবিউলের দেওয়া তথ্যমতে স্কুলের আঙ্গিনা থেকে মিন্টুর শরীরের ৫ টি খন্ডিতাংশ উদ্ধার করা হয়।