আশুলিয়াপ্রধান শিরোনামস্থানীয় সংবাদ

আশুলিয়ায় ভাড়া নিয়ে বিতণ্ডা, যাত্রীর মারধরে বাসচালক নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক: আশুলিয়ায় এক যাত্রী ও পথচারীদের মারধরের শিকার হয়ে বাসচালক নিহত হয়েছেন। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে আশুলিয়া থানার পুলিশ।

মঙ্গলবার (২ আগস্ট) বিকেল ৬টার দিকে আশুলিয়ার নরসিংহপুর ইটখোলা বাসস্ট্যান্ডে চালককে মারধরের ঘটনা ঘটে। গুরুতর অবস্থায় স্থানীয় নারী ও শিশু হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত বাসচালকের নাম মো. আরিফ (২৬)। তিনি শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বেশগ্রিপাড়ার মো. মোস্তফার ছেলে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তিনি গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় ভাড়া থাকতেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, কোনাবাড়ী থেকে কিরণমালা পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা মেট্রো-ব ১২-৭৮২৮) মিরপুরের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। বাসের অজ্ঞাতপরিচয় এক যাত্রী ভাড়া না দিয়েই ইটখোলা বাসস্ট্যান্ডে নেমে যান। পরে ভাড়া নিয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন বাসচালক আরিফ। পরে সেই যাত্রীসহ সড়কের পথচারীরা এগিয়ে এসে বাসচালককে মারধর শুরু করেন। এরপরেই অচেতন হয়ে পড়েন আরিফ। পরে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

বাসচালকের সহকারী মো. খোকন বলেন, ওই যাত্রী কোনাবাড়ী থেকে বাসে ওঠেন। এরপর থেকে ভাড়া চাইলেই তিনি পরে দিবেন, পরে দিবেন বলতে থাকেন। পরে তাঁর গন্তব্যস্থল ইটখোলা বাসস্ট্যান্ড চলে এলেও তিনি ভাড়া দেননি। আমি ড্রাইভারকে বলি যে বাস থামান একজন নামবে। পরে সেই যাত্রী নামেন কিন্তু তখনো ভাড়া দেননি। ড্রাইভার ভাড়া দেওয়ার কথা বললে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে যাত্রী রাস্তা থেকে ইট নেন হাতে, বাসে ঢিল ছোঁড়ার উদ্দেশ্যে। ততক্ষণে আমার ড্রাইভারও বাস থেকে নেমে যাত্রীর হাত ধরে ভাড়া দাবি করেন। তখন সেই যাত্রী ড্রাইভারকে মারধর করা শুরু করেন। পরে বাসস্ট্যান্ডের পাশের চায়ের দোকান থেকে ও সড়কে থাকা কয়েকজন মিলে ড্রাইভারকে মারধর শুরু করেন। ড্রাইভার তখন দৌড়ে গিয়ে বাসে গিয়ে শুয়ে পড়েন। এরপরে প্রস্রাব করে দিয়ে অচেতন হয়ে যান ড্রাইভার। পরে আমরা নারী ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা বলেন, ড্রাইভারের ঘাড়ে আঘাত লেগে তিনি মারা গেছেন।

খোকন আরো বলেন, আমাকেও ঘুষি মারছে তারা। পরে আমি প্রতিবন্ধী বুঝতে পেরে আমাকে আর মারেনি। আমাদের গাড়ির কম্পানির লোকের সঙ্গে যোগাযোগ হইছে। শুনেছি ড্রাইভারের পরিবারের লোকজনও আসছে। আমি আজকেই প্রথম এই ড্রাইভারের সঙ্গে ট্রিপে এসেছিলাম।

আশুলিয়া থানার এসআই আল মামুন কবির বলেন, আমরা খবর পেয়ে নারী ও শিশু কেন্দ্র হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করেছি। ঘটনাস্থলে গিয়েও প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি এক যাত্রীর সঙ্গে ভাড়া নিয়ে বাকবিতণ্ডার জের ধরে আশেপাশের কয়েকজন মিলে চালককে বেধড়ক মারধর করে। পরে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close