আশুলিয়াপ্রধান শিরোনামস্থানীয় সংবাদ
আশুলিয়ায় ভাড়াটিয়ার বাসায় শিশুর বস্তাবন্দি লাশ
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ আশুলিয়ায় অপহরণের পর ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ না পেয়ে বাড়ির মালিকের ছেলে রাজা মিয়া নামের ১০ বছরের এক শিশুকে হত্যা করেছে বাড়ির ভাড়াটিয়া দম্পতি। এঘটনায় মূল অভিযুক্ত পালিয়ে গেলেও অভিযুক্তের স্ত্রী লিজা বেগমকে আটক করেছে পুলিশ। খবর পেয়ে হাত পা বাঁধা অবস্থায় বস্তাবন্দি শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
রবিবার (২৮ মার্চ) রাত ১২ টার দিকে আশুলিয়ার বঙ্গবন্ধু রোডের চৌরাস্তা এলাকায় কালাম মাদবরের বাড়ি থেকে রাজার বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে সন্ধ্যায় ওই শিশুকে অপহরণের কথা বলে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন ভাড়াটিয়া আরিফুল ইসলাম।
নিহত রাজা আশুলিয়ার বঙ্গবন্ধু রোডের চৌরাস্তা এলাকার কালাম মাদবরের ছেলে। নিহত রাজা হলিক্রিসেন্ট স্কুলের শিক্ষার্থী।
অভিযুক্তরা হলেন পাবনা জেলার সুজানগর থানার ভাতশালা গ্রামের তফিজ উদ্দিনের ছেলে আরিফুল ইসলাম(২৫) ও তার স্ত্রী লিজা (২২)। তারা গত ১ মাস আগে এই বাসায় একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে পার্শ্ববর্তী পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।
পুলিশ ও নিহত শিশুর পরিবার জানায়, সন্ধ্যায় চা খাওয়ার কথা বলে আরিফুল নামে ভাড়াটিয়া তার বাসায় শিশু রাজাকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে ওই শিশুকে হত্যার পর হাত পা বেঁধে বস্তাবন্দী করে বেলকনিতে রেখে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। পরে শিশু রাজার বাবাকে ফোন করে আরিফুল বলেন ৫০ লাখ টাকা নিয়ে উত্তরায় যেতে।
পরে ঘরে থাকা আরিফের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রথমে মিথ্যা তথ্য দেয়। তবে রাজার স্বজনরা ঘরে তল্লাশী করে শিশুর বস্তাবন্দি লাশ বেলকনিতে খুজে পায়। নিহত শিশুর মুখে কাপড় ঢুকানো ছিল ও জুতার ফিতা দিয়ে পা ও গলা বাঁধা অবস্থায় ছিল।
এদিকে ছেলের শোকে দিশেহারা পাগল প্রায় বাবা আকুতি। কোন ভাবেই মানতে পারছেন বাবা। তার এলোমেলো কথায় বলছেন, আমার ছেলেকে ঘরে শুইয়ে রেখে এসেছি। ওর কিছুই হয়নি। ওকে নেশা জাতীয় কিছু খাওয়াইছে তাই ও এমন ভাবে আছে। একটু পরে ঠিক হয়ে যাবে। সন্তানের লাশের সুরতহাল করার সময় পাশে বসে তিনি ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলেন, ছেলের হাত টিপে দিচ্ছিলেন।
পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার পর উত্তেজিত হয়ে পরেন বাবা কালাম মাদবর। তিনি চিৎকার করে বলতে থাকেন পুলিশ আমার ছেলেকে নিয়ে গেল কেন? তোরা সবাই পুলিশকে থামালিনা কেন? আমার ছেলের যদি কিছু হয় তোদের খবর আছে। পরে স্বজনরা তাকে বলে যে কালকে সকালে ছেলেকে দিয়ে যাবে, এরপর তিনি একটু শান্ত হন। সন্তানহারা বাবাকে পুরো সময়টুকুতে একটুও কাঁদতে দেখা যায়নি। ঘটনার আকস্মিকতায় দিশেহারা তিনি।
এঘটনায় আশুলিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম। তিনি বলেন, খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে একজনকে আটক করেছি। অভিযুক্ত আরিফুলকে দ্রুত গ্রেফতার করার জন্য আমদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
/আরএম