প্রধান শিরোনাম
আশুলিয়ায় পরকীয়া প্রেমিককে নিয়ে স্বামীকে হত্যা, স্ত্রীসহ গ্রেপ্তার ৫
নিজস্ব প্রতিবেদক: আশুলিয়ায় পরকীয়া প্রেমিককে নিয়ে স্বামীকে হত্যা করে কৌশলে লাশ দাফনের করার সময় স্ত্রীসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বিল্লাল হোসেন বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামী করে আশুলিয়ায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে গ্রেফতারকৃতের আদালাতে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে পাঠানো হয়। এসময় স্ত্রী লিজা খাতুন ১৬৪ ধারায় অপরাধ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেয়। গ্রেফতারকৃত বাকি আসামীরা হল, টাঙ্গাইলের ধনবাড়ি থানার হাবিবর রহমানের ছেলে লিজার পরকীয়া প্রেমিক হাফিজুর, লিজার মা লাকী বেগম(৪০), লিজার পরকীয়া প্রেমিক হাফিজুরের বন্ধু সুজন মিয়া(২৪), লিজার দাদী ফুলজান(৫৮)। লিজার বাবা লেবু খান(৫০) এখনো পলাতক রয়েছেন।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলার কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ জানান, লিজা খাতুন আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে। বাকীদের প্রত্যেককে ২ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
নিহতের নাম প্রতীক হাসান (৩০)। তিনি ঘাটাইলের লক্ষ্মীন্দর ইউনিয়নের বিল্লাল হোসেনের ছেলে। তার মা হাসনা বেগম ওই ইউনিয়নের সংরক্ষিত ইউপি সদস্য।
নিহতের পরিবার ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, এক বছর আগে একই উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের ঘোনার দেউলি গ্রামের লেবু মিয়ার মেয়ে লিজা আক্তারের সঙ্গে প্রতীক হাসানের বিয়ে হয়। বিয়ের পরই আশুলিয়া গিয়ে স্বামী প্রতীক হাসান একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নেয়। আর লিজা ওখানেই গৃহপরিচিকার কাজ করতো। স্বামী পোশাক কারখানায় কাজ করতে গেলে একই বাসায় টাঙ্গাইলে ধনবাড়ি থানার সেলিম নামে এক ভাড়াটিয়া যুবকের সঙ্গে তার পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত সোমবার এ বিষয় নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। ওই সময় লিজা ও পরকীয়া যুবক মিলে পরিকল্পনা করে প্রতীক হাসানকে মারপিট ও শ্বাসরোধে হত্যা করে।
পরে লাশটি নিয়ে স্ট্রোক করে মারা গেছে বলে লিজা তার শ্বশুর-শাশুড়িকে জানায়। সোমবার সকাল ১১ টায় টাঙ্গাইলে ছেলে বাসায় নিয়ে যায়। তবে নিহত ছেলের শরীরের দেখে বিষয়টি সন্দেহ হলে তাদের আটক করে ঘাটাইল পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পরে পুলিশ তাদেরকে আটক করে আশুলিয়া থানা পুলিশকে অবহিত করে। আশুলিয়ায় পুলিশ তাদের আটক করে নিয়ে আসে।
নিহতের বাবা বিল্লাল জানান, আমার ছেলে আশুলিয়ায় গার্মেন্টেসে চাকুরি নেয়। এরই মধ্যে সেলিম নামে এক যুবকের সঙ্গে পরকীয়ায় জরিয়ে পড়ে লিজা। গত শনিবার প্রতিক হাসান গ্রামের বাড়ি আসে। লিজাও ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়ায় তার এক আত্মীয়ের বাড়ি আসেন। লিজা ফোনে যোগাযোগ করে প্রতিক হাসানকে আবার গাজীপুর নিয়ে যায়। এর মধ্যে ছেলের সঙ্গে তার এবং পরিবারের কারো সঙ্গে কোনো যোগাযোগ হয় না। পরে সোমবার ভোর রাতে লিজার বাবা ফোন করে বলেন, প্রতিক স্টোক করে মারা গেছে। আমরা লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ি আসতেছি। পরে সোমবার সকাল ৯ টার দিকে প্রতিকের লাশের সঙ্গে তার স্ত্রী এবং শ্বাশুড়ি বাড়িতে আসে।
আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জিয়াউল ইসলাম বলেন, হত্যকান্ডের ঘটনায় নিহতের বাবা বিল্লাল হোসেন বাদি হয়ে ৫ জনকে আসামী করে থানায় একটি মামলা করেছেন।পলাতক আসামীকে গ্রেফেতারের চেষ্টা চলছে। এদিকে নিহতের মরদেহ ঘাটাইল থানা পুলিশ ময়না তদন্তের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে বলেও জানান তিনি।