আশুলিয়াপ্রধান শিরোনামস্থানীয় সংবাদ
আশুলিয়ায় পরকীয়ার জেরেই স্বামীকে হত্যা, স্বীকার করলেন স্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক: আশুলিয়ায় নিজ ঘরে ডিস ব্যবসায়ী ইলিম সরকারকে (৪২) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার স্ত্রী সুলতানা আক্তার কেমিলি ও রবিউল করিম পিন্টু আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
বুধবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সালেহ ইমরান।
আদালতে স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি দাতারা হলেন- নাটোর জেলার গুরুদাশপুর থানার তেলটুপি গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে মোহাম্মদ রবিউল করিম পিন্টু (৩৫)। তিনি জামগড়া পল্লিবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের লাইনম্যান ছিলেন ও আশুলিয়ার জামগড়ার বেরন এলাকায় বসবাস করতেন। এছাড়া ইলিম সরকারের স্ত্রী ও কালু মিয়ার মেয়ে ক্যামিলি সুলতানা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। এঘটনায় আরও একজন পলাতক রয়েছেন।
জানা যায়, গত ২৮ মার্চ সিনেমা স্টাইলে স্বামী ইলিম সরকারকে হত্যা করেন স্ত্রী ক্যামিলি ও পরকীয়া প্রেমিক পিন্টুসহ তার সহযোগী। ইলিম সরকারের বাসায় বিদ্যুতের মিটার লাগানোর কাজ করতে এসে ক্যামির সাথে ২০১৯ সালে পরিচয় হয় পিন্টুর। এর পর তাদের মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি ইলিম সরকার জানতে পারলে তাদের মধ্যে মারাত্মক দাম্পত্য কলহের সৃষ্টি হয়। এই ঘটনা ইলিম সরকার তার স্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের জানাবেন বলে হুমকি দেন। পরে ক্যামিলি ও পিন্টু মিলে ইলিম সরকারকে হত্যার পরিকল্পনা করে তার ভাড়া বাসায় দুই জন ভাড়াটে খুনিকে কৌশলে বাসা ভাড়া নিয়ে দেন। তারা ব্যর্থ হলে গত ২৮ মার্চ নিজেরাই কুপিয়ে হত্যা করেন ইলিমকে। এসময় নিহতের স্ত্রী ক্যামিলি সুলতানা দরজায় পাহারা দেন। হত্যার আগের রাতে স্বামীকে দইয়ের সাথে ঘুমের ওষুধ খাওন ক্যামিলি। ঘটনার ১ মাস পর ইলিম সরকার হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করে পিবিআই। একই সঙ্গে ক্যামিলি ও পিন্টুকে গ্রেফতার করে আজ আদালতে তোলা হলে তারা স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি দেন।
সালেহ ইমরান জানান, বিকেল ৫ টার দিকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের বিচারক ফাইরুজ তাসনিমের আদালতে ক্যামেলি সুলতানা ও রাজীব হাসানের আদালতে রবিউল করিম পিন্টুকে তোলা হয়। এসময় তারা দুই জনই স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি দেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ মার্চ ঘরে ঢুকে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে যায় হত্যাকারিরা। এদিন সকালে তার রক্তাক্ত মরদেহ দেখে হত্যাকারী তার স্ত্রী চিৎকার করে কান্নাকাটি করেন। পরে হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনও করেন তিনি।