খেলাধুলা

আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে কোপার ফাইনালে ব্রাজিল

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ম্যাচের শুরুর দিকে গোছানো এক আক্রমণে দলকে এগিয়ে দিলেন গাব্রিয়েল জেসুস। আর দ্বিতীয়ার্ধে রবের্তো ফিরমিনোর গোলে রাখলেন মূখ্য ভূমিকা। তরুণ এই ফরোয়ার্ডের নৈপুণ্যে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে কোপা আমেরিকার ফাইনালে উঠেছে ব্রাজিল।

বেলো হরিজন্তের মিনেইরো স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বুধবার (৩ জুলাই) সকালে সেমি-ফাইনালে ২-০ গোলে জিতেছে স্বাগতিকরা।

কোপা আমেরিকায় আটবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল সবশেষ এর শিরোপাটি জিতেছিল ২০০৭ সালে। পরের দুটি আসরে কোয়ার্টার-ফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়ার পর ২০১৬ সালের আসরে গ্রুপ পর্ব থেকেই ছিটকে গিয়েছিল তারা। দীর্ঘ ১২ বছর পর অবশেষে আবার তারা উঠলো ফাইনালে।

চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে প্রথমার্ধে বল দখলের পাশাপাশি আক্রমণেও অনেকটা আধিপত্য ছিল ব্রাজিলের। এ সময় যদিও খুব বেশি সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারা, তবে কাঙ্ক্ষিত গোল ঠিকই আদায় করে নেয়।

গত দুইবারের রানার্সআপ আর্জেন্টিনা দ্বিতীয়ার্ধে তুলনামূলক ভালো খেলে। আগের চার ম্যাচে নিজের ছায়া হয়ে থাকা লিওনেল মেসিও এ পর্বে স্বরূপে ফেরার আভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু দলকে ম্যাচে ফেরাতে পারেননি তিনি।

ম্যাচের শুরুতে কিছুটা এলোমেলো খেলা আর্জেন্টিনা দ্বাদশ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো। লেয়ান্দ্রো পারেদেসের আচমকা নেওয়া দূরপাল্লার শট ক্রসবার ঘেঁষে বেরিয়ে গেলে বেঁচে যায় ব্রাজিল।

সাত মিনিট পর প্রথম উল্লেখযোগ্য সুযোগ পেয়েই এগিয়ে যায় তিতের দল। ডান দিক দিয়ে আক্রমণে উঠে দানি আলভেস দুজনকে কাটিয়ে সামনে রবের্তো ফিরমিনোকে পাস দেন। আর লিভারপুলের এই ফরোয়ার্ডের বাড়ানো বল ছোট ডি-বক্সের মুখে পেয়ে অনায়াসে জালে পাঠান জেসুস।

৩০তম মিনিটে ভাগ্যের ফেরে গোলবঞ্চিত হয় আর্জেন্টিনা। মেসির ফ্রি-কিকে আগুয়েরোর নেওয়া হেড ক্রসবারে প্রতিহত হত।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠা লড়াইয়ে ৫০তম মিনিটে আগুয়েরোর বাড়ানো বল ডি-বক্সে পেয়ে দুর্বল ভলি মারেন লাউতারো মার্তিনেস। ছয় মিনিট পর ভালো জায়গায় বল পেয়ে উড়িয়ে মেরে হতাশ করেন ফিলিপে কৌতিনিয়ো।

৫৭তম মিনিটে আবারও ভাগ্যের ফেরে গোলবঞ্চিত হয় আর্জেন্টিনা। বাঁ দিক থেকে মেসির বাঁ পায়ের জোরালো শট পোস্টে বাধা পায়। আলগা বল পেয়ে গোলমুখে বাড়ান সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার; কিন্তু পা লাগাতে পারেননি আগুয়েরো।

৭১তম মিনিটে ফিরমিনোর গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে আটবারের চ্যাম্পিয়ন। গোলটিতে মূল কৃতিত্ব অবশ্য জেসুসের। মাঝমাঠ থেকে ম্যানচেস্টার সিটির এই স্ট্রাইকার একজনকে কাটিয়ে বল পায়ে ছুটে একজনকে গতিতে পেছনে ফেলে এবং সবশেষ ডি-বক্সে ঢুকে আরেক জনকে ফাঁকি দিয়ে বাড়ান ডান দিকে। ফাঁকায় বল পেয়ে বাকিটা অনায়াসে সারেন লিভারপুলের ফরোয়ার্ড ফিরমিনো।

ম্যাচে ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠা আর্জন্টিনা ৭৭তম মিনিটে আরেকটি ফ্রি-কিক পেয়েছিল। কিন্তু তাতে গোলরক্ষক আলিসনকে তেমন কোনো পরীক্ষাতেই ফেলতে পারেননি বার্সেলোনা তারকা মেসি। বাকি সময়েও তৈরি করতে পারেনি কোনো সুযোগ।

ফলে আরও একবার খালি হাতেই ফিরতে হলো জাতীয় দলের হয়ে অধরা শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে থাকা মেসিকে। এই প্রতিযোগিতার ১৯৯৩ সালের আসরে সবশেষ বড় কোনো শিরোপা জেতা দলটির শিরোপা খরা কাটানোর অপেক্ষাও বাড়লো আরও।

চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াইয়ে ব্রাজিলের এটি ৪২তম জয়, আর্জেন্টিনার জয় ৩৮টি। বাকি ২৬ ম্যাচ ড্র।

পোর্তো আলেগ্রেতে বাংলাদেশ সময় বৃহম্পতিবার সকালে আরেক সেমি-ফাইনালে পেরুর মুখোমুখি হবে গত দুবারের চ্যাম্পিয়ন চিলি।

রিও দে জেনেইরোর মারাকানা স্টেডিয়ামে আগামী রোববার হবে ফাইনাল।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close