দেশজুড়ে
আম্পান তান্ডব; দেশে প্রাণ গেল ২৪ জনের
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উপকূলীয় এলাকায়। সাতক্ষীরা, বরগুনা, ভোলায় বেড়িবাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে অনেক গ্রাম। বিদ্যুতবিচ্ছিন্ন অন্তত ৮টি জেলা। যশোরে ১২ জনসহ আট জেলায় প্রাণ গেছে ২৪ জনের। এছাড়া বগুড়ায় নৌকাডুবে শিশুসহ দুজন নিখোঁজ রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে যাওয়ায় বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে সাতক্ষীরা। আশাশুনি, শ্যামনগর এবং কালীগঞ্জে বেড়িবাঁধের ২৩টি স্থান ভেঙে যাওয়ায় অসংখ্য মাছের ঘের ভেসে গেছে। মারা গেছেন তিনজন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে গাবুরা ইউনিয়ন, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনিতে। উপড়ে গেছে গাছপালা, বিধ্বস্ত হয়েছে ঘরবাড়ি ও পোল্ট্রিফার্ম। মোবাইল টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অনেক স্থানে নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
যশোরে আম্পানের তান্ডবে শার্শা, চৌগাছা, মনিরামপুর ও বাঘারপাড়ায় গাছ চাপা পড়ে ১২ জন নিহত হয়েছেন। উপড়ে গেছে গাছপালা, বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। কয়েকশ কাচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, গাছ, ফসল, পানের বরজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
আম্পানে ঝিনাইদহে গাছ চাপা পড়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া অসংখ্য কাঁচা ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে, ভেঙ্গে পড়েছে সড়ক যোগাযোগ।
খুলনার উপকুলীয় এলাকা কয়রায় বেড়িবাঁধের ৫টি স্থান ভেঙে অন্তত ৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে দাকোপ ও কয়রা উপজেলা। বিভিন্ন স্থানে গাছ পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
বরগুনা সদরের আয়লা বেড়িবাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পাথরঘাটার জিমতলা এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কুমিরমারায় ভেসে গেছে ঘরবাড়ি ও মাছের ঘের। লবণগোলা, বুড়িরচর, কালিবাড়ি এলাকায় স্লুইচগেট নির্মাণের জন্য তৈরি বাঁধ ধসে গেছে।
ঘূর্ণিঝড় আম্পানে বরিশাল বিভাগে ১৯ হাজার ২৪টি মাছের খামার, ঘের ও পুকুর আংশিক এবং পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় ক্ষতি হয়েছে ফসলের।
ভোলার ঢালচর, কুকরিমুকরি, চর পাতিলা, চর নিজামসহ বেশ কয়েকটি চরের নির্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর, চাচরা ও লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়নে তিনটি পয়েন্টের বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তলিয়ে গেছে কাঁচা ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ফসলের। এছাড়া নৌকা ডুবে ও গাছচাপায় তিনজন মারা গেছেন।
ঘূর্ণিঝড় আম্পানে পিরোজপুরে একজন নিহত হয়েছে। পানির চাপে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রায় ১৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশি ক্ষতি হয়েছে মঠবাড়িয়া উপজেলার বেড়িবাঁধ। এছাড়া জেলায় সাড়ে ৬ হাজারেরও বেশি পুকুর ও মাছের ঘের প্লাবিত হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তান্ডবে পাবনার বিভিন্ন এলাকায় ঘরবাড়ি, আম ও লিচু বাগান, গাছপালা, বৈদ্যুতিক লাইন ও দোকানপাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আম্পান ঝড়ে মেহেরপুর জেলায় কাঁচাপাকা বাড়ি, ফসল, বৈদুতিক খুঁটি, গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ঘুর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে কুষ্টিয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিধ্বস্ত হয়েছে সহস্রাধিক বাড়িঘর। উপড়ে গেছে বহু গাছপালা। উঠতি বোরো ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক।
চট্টগ্রামে পানি বেড়ে যাওয়ায় আনোয়ারায় বেড়িবাঁধ উপচে কয়েকটি ইউনিয়ন তলিয়ে গেছে। সন্দীপে মারা গেছে একজন। এছাড়া পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নৌকা উল্টে একজন স্বেচ্ছাসেবক ও জেলার গলাচিপায় আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সময় গাছের ডাল ভেঙে এক শিশু নিহত হয়েছে। রংপুরে মারা গেছেন একজন।