দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
আমার কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই: প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (২৫ জুন) সকাল ১০টা ৪৮ মিনিটে বক্তব্য দেয়ার জন্য স্টেজে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টার। সকাল ১০টার দিকে তিনি সেখানে পৌঁছান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন সব প্রতিষ্ঠান অর্থায়ন থেকে সরে দাঁড়ালো আমি তখন পার্লামেন্টে দাঁড়িয়েও ঘোষণা দিয়েছিলাম- পদ্মা সেতু নিজের টাকায় করব, নিজস্ব অর্থায়নে করব। এ ঘোষণার পর আমার দেশবাসীর কাছ থেকে অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছিলাম। তারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন এটাই সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল।
তিনি বলেন, জামিলুর রেজা সাহেবের নেতৃত্বে আমরা উপদেষ্টা কমিটি করেছিলাম। তারাও পিছু হটেননি। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এগিয়ে এসেছিল। অনেকের মতামত ছিল, এ নিজস্ব অর্থায়নে আবার কীভাবে করব। ধারণা ছিল বাংলাদেশ সারাজীবন পরনির্ভরশীল থাকবে আর অন্যের দয়ায় চলতে হবে। জাতির পিতা আমাদের আত্মমর্যাদা নিয়ে বাঁচতে শিখিয়েছেন। আমি বলেছিলাম, আমরা নিজেদের টাকায় করতে পারব, ওটা তো জনগণেরই টাকা। বাংলাদেশের জনগণই আমার সাহসের ঠিকানা, বাংলাদেশের জনগণকে আমি স্যালুট জানাই।
যারা বলেছিলেন, এটা কখনোই সম্ভব না, এটা একটা স্বপ্ন মাত্র, ইত্যাদি ইত্যাদি … যাহোক, আমার কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। কারো বিরুদ্ধে কোনো অনুযোগ নেই। তাদের হয়তো চিন্তার দৈন্যতা আছে, আত্মবিশ্বাসের দৈন্যতা আছে। কিন্তু আজকের পর থেকে আমি মনে করি তাদেরও আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মিথ্যা অপবাদ দিয়ে, দুর্নীতির অপবাদ দিয়ে কীভাবে একটি পরিবারকে মানসিক যন্ত্রণা দিয়েছে। সেই যন্ত্রণা ভোগ করেছে আমার বোন শেখ রেহানা, আমার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, আমার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ, আমার উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনসহ এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই যন্ত্রণা ভোগ করেছে। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমত, সত্যের জয় হয়েছে।
এ সময় সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা জানাই দেশবাসীর প্রতি যারা সেদিন আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল। যারা এখানে বসবাস করতো তারা জমি ছেড়ে দিয়েছে। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। যদিও তাদের পুনর্বাসন করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক বাধা উপেক্ষা করে আজকে ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। আমাদের জেদ ছিল এ সেতু নির্মাণ করবই। সেই আত্মবিশ্বাসে আজকে আলোর পথে যাত্রা করতে সক্ষম হয়েছি। যদিও মিথ্যা অভিযোগে দুই বছর দেরি হয়েছে। তবুও আমরা দমে যাইনি। আমরা বিজয়ী হয়েছি। সুকান্ত ভট্টাচার্যের কথায় বলতে চাই, আমরা মাথা নোয়াবার নই। আমরা কখনো মাথা নোয়াব না। শেখ মুজিবুর রহমান কখনো মাথা নত করে চলেননি। আমরাও কখনো নত থাকব না।
এদিকে মাওয়া পয়েন্টে টোল পরিশোধের পর উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সেখানে মোনাজাতেও যোগ দেবেন। এরপর মাওয়া পয়েন্ট থেকে শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবেন প্রধানমন্ত্রী।
/এএস