শিক্ষা-সাহিত্য

আবরার হত্যার বিচার দাবিতে গবিতে বিক্ষোভ

রাকিবুল হাসান, গবি প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ছাত্রলীগ কর্তৃক নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (০৯ অক্টোবর) দুপুর একটায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

উক্ত কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন বিভিন্ন অনুষদীয় ডীন, বিভাগীয় প্রধানসহ শিক্ষকবৃন্দ। এ সময় কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মনসুর মুসা, রাজনীতি ও প্রশাসন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো: নজরুল ইসলাম, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রধান মনিরুল হাসান মাসুম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কর্মসূচির অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসের বাদামতলা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘শিক্ষা-সংঘাত, একসাথে চলে না’, ‘ফাসি ফাসি ফাসি চাই, ছাত্রলীগের ফাসি চাই’ ইত্যাদি স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস।

বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন, টান্সপোর্ট  ইয়ার্ড, বাদাম তলা, ফুচকা চত্ত্বর, হিটলার ঝালমুড়ি কর্ণার হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে এসে শেষ হয়। এর আগে নিহত আবরারের রুহের মাগফিরাত কামনায় সকলে এক মিনিটে দাড়িয়ে নীরবতা পালন করেন।

সমাবেশে অধ্যাপক ড. মনসুর মুসা বলেন, ‘ফাহাদের মত করুণ মৃত্যু আমরা কখনোই চাই না। আমি সরকার এবং যাদের হাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রন তাদেরকে এ ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানাই। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজের মেরুদন্ড সোজা করে দাড়াতে হবে। একটা প্রতিষ্ঠান অন্যের মুখের দিকে তাকিয়ে চললে, তারা কখনোই শিক্ষাকে অর্থপূর্ণ করতে পারবে না।’

সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, আমার ভাই মরল কেন প্রশাসন জবাব চাই। আবরার হত্যার সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি সহ আবরারের বাবা মায়ের ভরণপোষণ বুয়েট প্রশাসন ও সরকার কে করতে হবে। আবরারের খুনিদের বিচারে গাফলাতি হলে আমরা কঠোর আন্দোলের ডাক দিবো।

ছবিঃ আবরার হত্যার প্রতিবাদে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষকের বিক্ষোভ মিছিল।

ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রধান মনিরুল হাসান মাসুম বলেন, একজন ছাত্র রুপি সন্ত্রাসী আরেকজন ছাত্রকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে। এর অর্থ শিক্ষকরা তাদের কোনো শিক্ষাই দিতে পারিনি। মুক্তিযোদ্ধা চেতনা বলেন বা বাঙালি চেতনা কোনোটাই তাদের কাছে পৌঁছে দিতে পারিনি। সেই ব্যর্থতা থেকে, সেই কষ্ট থেকে আমি আজ এই বিক্ষোভে এসেছি।

উল্লেখ্য, রোববার (৬ অক্টোবর) দিবাগত মধ্যরাতে বুয়েটের সাধারণ ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবরারকে শেরেবাংলা হলের দ্বিতীয় তলা থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ছাত্রলীগের তেরজনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আটকদের মধ্যে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সহ-সভাপতিও রয়েছেন।

/ঢাকা অর্থনীতি/আরএইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close