দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
আদালতে জঙ্গিদের মাথায় আইএস টুপি, নানা প্রশ্ন
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা মামলার মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদুল ইসলাম ওরফে র্যাশসহ একাধিক জঙ্গি এজলাসে ও প্রিজন ভ্যানে জঙ্গি সংগঠন আইএসের পতাকাযুক্ত টুপি পরে নানা স্লোগান দিয়েছে।
একাধিক গণমাধ্যমের ক্যামেরায় সেই বিষয়টি উঠে আসার পর নিরাপত্তার পাশাপাশি নানান প্রশ্ন সামনে এসেছে। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন জঙ্গিরা আইএসের প্রতীকের টুপি পেলো কোথা থেকে?
আসলাম হোসেন ওরফে র্যাশকে মাথায় আইএস’র কালো পতাকা বেঁধে ‘আল্লাহু আকবর’ বলে চিৎকার করতে দেখা যায়। তিনি লিফটে ওঠার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সামনেই আইএসের প্রতীক চিহ্নিত কালো টুপি পরেন। এজলাসেও তার মাথায় ছিল এ টুপি।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (কেরাণীগঞ্জ) জেলার মাহবুবুল ইসলাম জানান, হলি আর্টিজানের মামলায় আটজন আসামিকে আমরা আদালতে পাঠানোর জন্য পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে দিয়েছি। এদের মধ্যে সাতজনের কাছে কিছুই ছিল না। একজনের কাছে নামাজের সাদা টুপি ছিল। আইএস’র টুপির বিষয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে, সেটি আমাদেরও প্রশ্ন। টুপিটি আসলো কোথা থেকে?
‘‘আদালতের রায়ের পরও তাদেরকে আমরা রিসিভ করেছি। চেক করে তাদেরকে কারাগারের ভেতরে প্রবেশ করানো হয়েছে, কিন্তু এমন কিছু তখনও এমন টুপি পাওয়া যায়নি।’’
মহানগর দায়রা জজের নিচতলার হাজতের দায়িত্বরত পুলিশ পরিদর্শক হারুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আসামিদের চেক করা হয়, তাদের কাছে ছুরি-চাকু বা বিস্ফোরক জাতীয় কিছু আছে কি না। তাদের কাছে টুপি থাকলে, কিংবা টুপির মধ্যে কি লিখা আছে এটা বুঝা সম্ভব নয়।’
এই নিয়ে বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সংবাদ সম্মেলনেও প্রশ্ন করা হয়েছিল।
জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি জেনেছি, ‘এটি নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। আমি এখনই তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলব।’
বুধবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান মামলার ৮ আসামির মধ্যে ৭ জনকে ফাঁসির আদেশ এবং একজনকে খালাস দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র্যাশ, আব্দুস সবুর খান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাদিসুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশিদ। খালাস পেয়েছেন মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাত ৯টার দিকে রাজধানীর গুলশান-২-এর ৭৯ নম্বর সড়কের পাশে অবস্থিত হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিরা হামলা চালায়। তারা অস্ত্রের মুখে দেশি-বিদেশি অতিথিদের জিম্মি করে। পরে রাতেই ওখানে অভিযান চালাতে গিয়ে পুলিশের দুই কর্মকর্তা রবিউল করিম ও সালাউদ্দিন খান নিহত হন। এছাড়াও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ৩১ সদস্য ও র্যাব-১ এর তৎকালীন পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদসহ ৪১ জন আহত হন।
পরদিন ২ জুলাই ভোরে সেনা কমান্ডোদের পরিচালিত ‘থান্ডারবোল্ট’ নামের অভিযানে পাঁচ জঙ্গিসহ ছয়জন নিহত হয়। এরপর পুলিশ সেখান থেকে ১৮ বিদেশিসহ ২০ জনের লাশ উদ্ধার করে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরও একজন রেস্তোরাঁকর্মী। আর কমান্ডো অভিযানের আগে ও পরে ৩২ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
/আরএম