দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম
আজ ১৮০৪ জন রোহিঙ্গা ভাসানচর যাবে
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে নোয়াখালীর ভাসানচরে যাওয়ার জন্য প্রায় ১ হাজার ৮০০ রোহিঙ্গা চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন।
সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে দুই দফায় ৩০টি বাসে চড়ে নগরের পতেঙ্গার বিএফ শাহীন কলেজ মাঠে এসে পৌঁছান তারা।
কলেজ মাঠে রাতযাপনের পর মঙ্গলবার সকাল ৯টায় পতেঙ্গা বোট ক্লাব থেকে জাহাজে ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দেবেন রোহিঙ্গারা।
এর আগে সোমবার দুপুরে কক্সবাজারের উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের বহনকারী ৩০টি বাস দুই ধাপে চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাত্রা করে।
প্রথম দফায় ১৩টি বাস এবং দ্বিতীয় দফায় ১৭টি বাস সোমবার রাতে নগরের পতেঙ্গার বিএফ শাহীন কলেজ মাঠে এসে পৌঁছায়।
সরকারি বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেল পর্যন্ত তিন ধাপে বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে আগত রোহিঙ্গাদের নিয়ে উখিয়া ডিগ্রি কলেজের মাঠ থেকে চট্টগ্রাম নেওয়া হয়। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে প্রথম ধাপে ১৩টি বাসে করে ৫৯৫ জন, দ্বিতীয় ধাপে ১১টি বাসে করে ৫৩৯ জন এবং বিকেলে তৃতীয় ধাপে ১৫টি বাসে করে ৬৭০ জন রোহিঙ্গা উখিয়া কলেজ মাঠ থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
রোহিঙ্গাদের মালামাল নিয়ে ১১টি কার্গো ও ট্রাক রওনা দেয়। সর্বমোট ৪২৮ রোহিঙ্গা পরিবারের এক হাজার ৮০৪ জন দ্বিতীয়পর্যায়ে ভাসানচর যাবেন আজ।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (বন্দর) অলক বলেন, রোহিঙ্গারা রাতে বিএফ শাহীন কলেজ মাঠে থাকবেন। কলেজ মাঠেই তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় থাকা ১২ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে গত ৪ ডিসেম্বর ১ হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গাকে নোয়াখালী সংলগ্ন দ্বীপ ভাসানচরে নেওয়া হয়। প্রথম দলকে পাঠানোর ২৪ দিন পর সোমবার দ্বিতীয় দলকে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হলো।
মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। নতুন পুরনো মিলে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা এখন বসবাস করছেন কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা শিবিরে। প্রাথমিকভাবে সেখান থেকে এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয় সরকার।
এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের মে মাসে সাগর পথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় বঙ্গোপসাগরে ভাসমান অবস্থা থেকে উদ্ধার করে ৩০৬ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে আশ্রয় দেওয়া হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় গত ৪ ডিসেম্বর আরও এক হাজার ৬৪২ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয়।
ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে সরকার। সেখানে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়। যেখানে রয়েছে- শিশুদের খেলার মাঠ, স্কুল, চিকিৎসা কেন্দ্র, দ্বীপে কর্মরত দেশি-বিদেশি সংস্থার লোকজনের জন্য থাকার আলাদা ভবনসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা।
/আরএম