বিশ্বজুড়ে
আজ শেষ দফায় ভোট; নজর বুথফেরত জরিপে
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে খ্যাত ভারতের লোকসভা নির্বাচনের সপ্তম ও শেষ দফায় আজ শনিবার ভোট গ্রহণ করা হবে। ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই সন্ধ্যায় বিভিন্ন গণমাধ্যম বুথফেরত সমীক্ষা বা এক্সিট পোল প্রকাশ করবে। তাতে ধারণা পাওয়া যাবে, ভারতের পরবর্তী সরকার কারা গঠন করবে। তবে এ ধরনের জরিপের ফল সব সময় নির্ভরযোগ্য নাও হতে পারে।
আজ ভোট নেওয়া হবে দেশটির আটটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৫৭টি লোকসভা আসনে। এর মধ্য দিয়েই ভারতের ৫৪৩টি লোকসভা আসনে ভোট নেওয়া সম্পন্ন হবে।
এদিকে ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার আধা ঘণ্টা পরই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে শুরু হবে বুথফেরত জরিপ। সর্বভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর পাশাপাশি একাধিক বেসরকারি সংস্থাও জরিপ চালিয়ে থাকে। তাতে শুধু একটা পূর্বাভাস পাওয়া যায়, চলমান নির্বাচনে কোন দল বা জোট ক’টি আসন পেয়ে সরকারে আসতে যাচ্ছে।
গত ১৯ এপ্রিল শুরু হওয়া নির্বাচনের আগে ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) ৪০০ আসনে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। তবে ভোট শুরুর পরপরই তাদের মোহভঙ্গ হতে শুরু করে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শাসনে ভারতে বিরোধী দলগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে। আইনের শাসন ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতারও বেহাল দশা। মূল্যস্ফীতি ও বেকারত্বের কারণে অর্থনৈতিক উন্নয়নের গল্পও ফিকে হয়ে এসেছে।
এ কারণে অনেক ভোটার গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা হারিয়েছেন এবং কেন্দ্রবিমুখ ছিলেন। ফলে অন্যান্য নির্বাচনের তুলনায় এবার কম ভোট পড়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিজেপি সমর্থকরাই হতাশ হয়ে কেন্দ্রে যাননি। ফলে মোদির আত্মবিশ্বাসে বড় ধরনের ফাটল দেখা দিয়েছে। তাই ভোট শুরুর পরপরই তিনি উন্নয়নের গল্প বলার পরিবর্তে মুসলিমবিরোধী প্রচারণার আশ্রয় নিয়েছেন।
বিশ্লেষকরা একমত, মোদি শেষ পর্যন্ত টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করতে সক্ষম হলেও তাঁর দল ও জোট এবার অনেক কম আসন পাবে।
অন্যদিকে, মোদিবিরোধী হাওয়ার ওপর ভর করে বিরোধী জোট ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স (ইন্ডিয়া) এবার এনডিএ জোটকে পরাজিত করার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে।
বিরোধী দলগুলো তো মোদির বিদায়ের পূর্বাভাস দিয়ে বসে আছে। আগামী ৪ জুন (মঙ্গলবার) ভোট গণনার দিনই সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।
শেষ দফায় আজ মোট ভোটারের সংখ্যা প্রায় ১০ কোটি ৬ লাখ। এ দফায় দেশজুড়ে ৯০৪ প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ হবে। এর মধ্যে অন্যতম প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তৃতীয়বারের জন্য সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার লক্ষ্যে উত্তরপ্রদেশের বারাণসী কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েছেন তিনি। এই কেন্দ্রে তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ কংগ্রেসের অজয় রায়।
এ ছাড়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিজেপি প্রার্থী অনুরাগ ঠাকুর (হামিরপুর), রবিশংকর প্রসাদ (পাটনা সাহিব), বিজেপি প্রার্থী ভোজপুরি অভিনেতা রবি কিষান (গোরখপুর), বিহারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদবের মেয়ে আরজেডি প্রার্থী মিসা ভারতী (পাটলিপুত্র), সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা (কাংড়া), বিজেপি প্রার্থী অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত (মান্ডি), তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাতিজা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (ডায়মন্ড হারবার), টালিউড অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ (যাদবপুর), বিজেপির রেখাপাত্র (সন্দেশখালী), শিরোমণি আকালি দলের প্রার্থী হরসিমরাত কৌর বাদল (ভাতিণ্ডা)।
গত ১৬ মার্চ ভারতের দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের নিম্নসভা লোকসভা ভোটের সূচি প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। সেই থেকে আড়াই মাসের বেশি সময় ধরে চলে নির্বাচন প্রক্রিয়া।