দেশজুড়ে
আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়নি: ওবায়দুল কাদের
ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক; আওয়ামী লীগ থেকে যাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের বহিষ্কারের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘আমরা কি দলের পক্ষ থেকে বলেছি যে যাঁরা স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন, তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে? এই সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগে এখনো হয়নি।’
রোববার (০৩ ডিসেম্বর) দুপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বিফ্রিংয়ে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির অনেকেই নেতিবাচক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে চান। এর প্রমাণ, তাঁদের দলের অনেকে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, শুধু সমশের মোবিন, তৈমুর আলম খন্দকার নন, জেনারেল ইবরাহিম বীর প্রতীক সাহেবের মতো অনেকেই আসবেন ধারণা ছিল। আজকে অনেকেরই শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে। অনেকে বিএনপির এই নেতিবাচক রাজনীতিতে জড়িয়ে নিজেদের রাজনৈতিক জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চান না। সুস্থ ও স্বাভাবিক রাজনৈতিক ধারায় ফিরে আসতে তাঁরা শুরু করেছেন।’
বিএনপি ও তাদের জোটসঙ্গী দলগুলোর নেতাদের মধ্যে যাঁরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে অনেক বড় বড় নেতাও আছেন বলে দাবি করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘শুধু শাহজাহান ওমর নন, অনেকে এসেছেন। তাঁরা বিএনপির রাজনীতিতে অত্যন্ত সক্রিয় ছিলেন। আজকে বিএনপির রাজনীতিকে তাঁরা প্রত্যাখ্যান করে রাজনীতির সুস্থ ধারায় ফিরে আসতে শুরু করেছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাঁদের ধন্যবাদ জানাই। আমরা বিশ্বাস করি, সামনে বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী এই অসুস্থ রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে সুস্থ ধারার রাজনীতিতে ফিরে আসবেন।’
নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপকে আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি। শৃঙ্খলাজনিত কোনো ব্যবস্থা বা অন্য কোনো ব্যবস্থা, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলি—এগুলো আওয়ামী লীগ করছে না, প্রধানমন্ত্রী করছেন না, সবই নির্বাচন কমিশন করছে। ইউএনও ট্রান্সফার, ওসিদের ট্রান্সফার, ডিসিদের ট্রান্সফার—এই কাজগুলো আজ সরকারের কাজ নয়। নির্বাচন কমিশন এসব বিষয় নিয়ন্ত্রণ করছে।
এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জানান, সর্বমোট ২৯টি নিবন্ধিত দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। বিএনপি না হলে নির্বাচন অশুদ্ধ হয়ে যাবে, একতরফা হয়ে যাবে কেন—সে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, বিএনপির যে ‘ভুয়া’ আন্দোলন, এই আন্দোলনের কারণে অনেকে বিভ্রান্ত হয়েছে। আজকে তাদের ঝটিকা মিছিল করতে হয় অন্ধকারে। কুয়াশার মধ্যে হঠাৎ করে গুহা থেকে বেরিয়ে শুরু করে দেয় মিছিল, কিছুক্ষণ পর আর নেই। পুলিশ দেখলে আবার চলে যায়। এদের বুকে সাহস নেই।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানরে উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি তারেক রহমানকে বলব, সাহস থাকলে, রাজনীতি করতে চাইলে, সৎ সাহস থাকলে আসুন মাঠে। আমরা একটা রাজনৈতিক দল, আপনারা আমাদের প্রতিপক্ষ, কিন্তু আপনাদের আমরা শত্রু কখনো ভাবিনি। ষড়যন্ত্র করিনি। খালেদা জিয়াকে হত্যা করতে যাইনি, জিয়াউর রহমানকে হত্যা করতে যাইনি, আমরা হত্যার রাজনীতি করি না। ষড়যন্ত্রের রাজনীতিকে আমরা বিশ্বাস করি না। সৎ সাহস থাকলে কেন আসেন না? লন্ডনে বসে বাংলাদেশে আন্দোলন করবেন, এই ভুলের রাজনীতির কারণে আপনারা কিছুদিন পর দলের নেতা-কর্মীদের হারাবেন।
জাতীয় পার্টির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আসন ভাগাভাগি নিয়ে আওয়ামী লীগের কাছে জাতীয় পার্টি কোনো তালিকা পাঠায়নি। সত্যিকারের বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টির নিজেদের প্রমাণ করার মোক্ষম সময় এটা।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো প্রার্থীকে হুমকি দেওয়া হলে ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশন। সার্বিক বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করছে কমিশন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সায়েম খান প্রমুখ।