আশুলিয়াপ্রধান শিরোনাম
অভিযোগ তুলে আশুলিয়ার নবীনগর-কুরগাঁও সড়কের কাজ বন্ধ
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাভারের আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়নে নবীনগর-কুরগাঁও সড়কের ৪৫০ মিটার একটি রাস্তার পূর্ণনির্মাণ কাজে অনিয়ম ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তাটির নির্মাণ কাজ এখনো শেষ হয়নি। ঢালাই কাজ হচ্ছে ম্যানুয়ালি (হাতের ঢালাই)। নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে নিম্নমানের কাঁদা মেশানো পাথর। এছাড়াও নির্মাণ কাজ করার কথা “এইচআর এন্টারপ্রাইজ” নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু এ নির্মাণ কাজের মূল তদারকি করছেন ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম।
রাস্তাটির প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, রাস্তাটির পূর্ণনির্মাণে ৮সিসি ঢালাইয়ের জন্য ১কোটি ৫লক্ষ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এ বছরের ২২জুন এ রাস্তার নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এ নির্মাণে কাজ রেডিমিক্স দিয়ে ৮সিসি ঢালাই করার কথা রয়েছে। তবে এসব নিয়মের তোয়াক্কা না করেই ঠিকাদাররা নিম্নমানের উপাদান ব্যাবহার করে চালাচ্ছে নির্মান কাজ। এ নিয়ে এলাকার জনগনের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ নিয়ে সাভার উপজেলা প্রকৌশলী সালেহ হাসানের সাথে কথা বললে তিনি জানান, প্রকল্পসূচি অনুযায়ী রাস্তাটি রেডিমিক্স দিয়ে ঢালাই করার কথা রয়েছে। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে এখানে এসে দেখা যায় রাস্তাটি ম্যানুয়ারি ঢালাইয়ের কাজ করা হচ্ছে। পরে সকল কিছু বিবেচনা করে রাস্তাটির পূর্ণনির্মাণ কাজ স্থগিত করা হয়েছে।
তবে সমস্যা সমাধান করে কাজ শুরু করা হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি শফিউল আলম সোহাগ জানান, স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে এসে অভিযোগের সত্যতা খুজে পাই। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ নিয়ে কাজের মূল তদারককারী ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম আমার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরন করে। এ ঘটনার পরে আমি উপজেলা প্রকৌশলীকে বিস্তারিত ঘটনা জানালে উনি ঘটনাস্থলে আসেন। পরে উপজেলা প্রকৌশলী রাস্তার পূর্ণনির্মাণ কাজ বন্ধ করার আদেশ দেন।
স্থানীয় প্রতিনিধি আরও জানান, এ ঘটনার পরে ছাত্রলীগ নেতা ও তার ভাই আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে শুরু করেন। আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।
এ ঘটনায় রাস্তার নির্মাণ কাজে আসা শ্রমিকরা জানায়, রাস্তার নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের ঠিকাদার চলে গিয়েছে। এখন আমাদের সারাদিনের পারিশ্রমিকের কি হবে?
ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম অসৌজন্যমূলক আচরনের বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, আমি নিজে পাথালিয়া ইউনিয়নের সন্তান। আমি নিজেও সকালে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। স্থানীয়রা পাথরে কাঁদা অভিযোগ দিলে আমি পাথরগুলো ধুয়ে নিতে বলেছি। পরে প্রশাসনের সাথে কথা বলে আমি নিজেই নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে বলেছি।
তিনি আরও জানান, রেডিমিক্স তো আরও খরচ কম, ঝামেলা কম। নিজের এলাকার কাজ ভালো করার জন্যই ম্যানুয়ালি (হাতের ঢালাই) ব্যবস্থা করেছিলাম, কিন্তু এতে আরও ঝামেলা হয়ে গেল। আর এ কাজে ড্রেনের ব্যবস্থা ছিল না। পরে আবেদন করে ড্রেনের ব্যবস্থা করতে গিয়েই কাজটা প্রায় ৫/৬মাস পিছিয়ে গিয়েছে।
এসময় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান “এইচআর এন্টারপ্রাইজ” প্রসঙ্গে তিনি জানান, অন্য কারো করার কথা থাকলেও উপজেলা থেকে আমাদের দায়িত্বে দেওয়া হয়েছিল। তাই আমরা এ কাজটা তদারকি করছি।