দেশজুড়ে

অবশেষে জানা গেল আকবরকে পালাতে সাহায্যকারীর নাম

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ সিলেট নগরীর বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় এসআই আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। এরমধ্যে ছয়জন পুলিশ লাইনে থাকলেও মূল হোতা এসআই আকবর পালিয়ে যান। অবশেষে জানা গেল আকবরকে পালাতে কে সাহায্য করেছেন।

এসআই আকবরকে পালাতে সহায়তা ও সিসিটিভির ফুটেজ নষ্ট করার অভিযোগে এসআই হাসান উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাকে সিলেট মহানগর পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। বুধবার বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেন এসএমপির এডিসি (মিডিয়া) বিএম আসরাফ উল্লাহ তাহের।

১০ অক্টোবর মধ্যরাতে রায়হানকে তুলে নিয়ে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ করেন তার স্বজনরা। ওইদিন সকালে তিনি এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। নির্যাতন করার সময় তৌহিদ মিয়া নামে এক পুলিশ সদস্যের মুঠোফোন থেকে রায়হানের পরিবারের কাছে ফোন দিয়ে টাকা চাওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা সকালে ফাঁড়ি থেকে হাসপাতালে গিয়ে রায়হানের লাশ শনাক্ত করেন।

ঘটনার শুরুতে ওই ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা ছিনতাইকারী সন্দেহে নগরীর কাস্টঘর এলাকায় গণপিটুনিতে রায়হান নিহত হন বলে প্রচার চালান। কিন্তু গণপিটুনির স্থান হিসেবে যে কাস্টঘর এলাকার কথা বলেছিল পুলিশ- সেখানে সিটি কর্পোরেশনের স্থাপন করা সিসিটিভির ফুটেজে ওই সময় এমন কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি।

এছাড়া ১৬ অক্টোবর কাস্টঘরের সুইপার গলির চুলাই লাল দাবি করেন, ঘটনার দিন রাতে তার বাসা থেকে রায়হানকে সুস্থ ধরে নিয়ে যায় বন্দরবাজার ফাঁড়ি পুলিশ। এ ঘটনায় ১১ অক্টোবর রাত আড়াইটার দিকে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা করেন রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার। বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে পুলিশ সদস্যরা নির্যাতন করে তার স্বামীকে হত্যা করেন বলে মামলায় উল্লেখ করেন তিনি।

এ ঘটনায় পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে আলোচিত এ মামলাটির তদন্তভার পিবিআইকে দেয়া হয়। ১৩ অক্টোবর রাতেই এ মামলার নথি পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করে মহানগর পুলিশ। এর পরদিন দুপুরে পিবিআই কর্মকর্তারা বন্দরবাজার ফাঁড়িতে যান এবং ঘটনার আলামত সংগ্রহ করেন। ১৫ অক্টোবর সকালে দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে রায়হানের লাশ তোলা হয়। পরে পুনরায় ময়নাতদন্ত শেষে ওইদিন বিকেলে ফের নগরীর আখালিয়ার নবাবি মসজিদ সংলগ্ন পঞ্চায়েতি কবরস্থানে রায়হানকে দাফন করা হয়।

ফরেনসিক রিপোর্টে রায়হানের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। তার দুই হাতের তিনটি আঙুলের নখও উপড়ানো ছিল। এ ঘটনার পর পুলিশের বিরুদ্ধে হেফাজতে নির্যাতন করে রায়হানকে মেরে ফেলার অভিযোগ ওঠে।

রায়হানের মৃত্যুর জন্য দায়িত্বহীনতার দায়ে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করে তাদের পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। এরমধ্যে এসআই আকবর ১৩ অক্টোবর সকালে পুলিশ লাইন থেকে পালিয়ে যান।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close